শেরপুরের শ্রীবরদীতে ট্রিপল মার্ডারের প্রধান আসামি মিজানুর রহমান ওরফে মিন্টু (৪০) হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ২৪ জুন শুক্রবার রাতে ছুটির দিনে দায়িত্বে থাকা শেরপুরের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নূর-ই-জাহিদের কাছে স্বেচ্ছায় ওই জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে সে স্ত্রী, শাশুড়িসহ ৩ জনকে হত্যাসহ ৬ জনকে কুপানোর কথা স্বীকার করে জানায়, ‘টার্গেট কইরাই সবাইরে মারছি। এ নিয়ে আমার কোনো আফসোস নাই’। শনিবার দুপুরে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার বিশ্বাস ও কোর্ট ইন্সপেক্টর খন্দকার শহীদুল হক ওই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শুক্রবার ভোরে অভিযান চালিয়ে শ^শুরবাড়ির পাশেই একটি গাছের উপর থেকে মিন্টুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্র জানায়, হত্যার পরপরই গা ঢাকা দেয় ঘাতক মিন্টু মিয়া। তাকে ধরতে পুলিশের ছয়টি টিমসহ র্যাব ও একাধিক আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী একযোগে অভিযানে নামে। তারা শ্রীবরদী, জামালপুরের বকশীগঞ্জ ও দেওয়ানগঞ্জ এবং শেরপুর সদরের সব সড়ক সিলগালা করে দেয়। কিন্তু কোনোভাবেই মিন্টুর হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। এক পর্যায়ে মোবাইল ট্র্যাক করে ভোরবেলা পুরো কাকিলাকুড়া গ্রাম ঘিরে ফেলে পুলিশ। পরে দেখা যায়, একটি গাছের ডালের ওপর বসে আছে মিন্টু। তাকে বুঝিয়ে হত্যায় ব্যবহূত দা, ছুরিসহ গাছ থেকে নামিয়ে এনে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এদিকে ওই চাঞ্চল্যকর মামলার এজাহারনামীয় পলাতক অপর ৩ আসামিকে এখনও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ বলছে, তাদের উদ্ধারে জোর অভিযান চলছে। এদিকে শুক্রবার রাতে নিহত ৩ জনের নামাজে জানাজা ও দাফন নিজ এলাকায় সম্পন্ন হয়েছে। ওই ঘটনায় এলাকায় শোকের পাশাপাশি আতঙ্কও নেমে এসেছে। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী দ্রুত ঘাতক মিন্টু ফাঁসি দাবি করেছেন।
উল্লেখ্য, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে গত বৃহস্পতিবার রাতে শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের পটল গ্রামের শ^শুরবাড়িতে হামলা চালিয়ে দা দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রী মনিরা বেগম (৩৫), শাশুড়ি শেফালী বেগম (৫০) ও চাচা শ্বশুর নূর মোহাম্মদ ওরফে মাহমুদকে (৬৫) হত্যা করে মিজানুর রহমান মিন্টু। ওই ঘটনায় গুরুতর আহত হয় মিন্টুর শ্বশুর মনু মিয়া, শ্যালক শাহাদত হোসেন ও মাহমুদের স্ত্রী ছাহেরা বেগম (৫২)। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মনু মিয়ার অবস্থাও সংকটাপন্ন। ওই ঘটনায় মিন্টু মিয়াকে প্রধান আসামি করে মোট ৪ জনের নামে মনিরার ছোট বোন মিনারা বেগম বাদী হয়ে শ্রীবরদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।