আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এখনো ঢের বাকি। নির্বাচনকে সামনে রেখে শেরপুর-৩, (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতি) আসনে বইছে আগাম নির্বাচনী হাওয়া। সেই সাথে চলছে প্রার্থীদের মনোনয়নের দৌঁড় ঝাঁপ ও লবিং। এ আসনে আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসাবে একাধিক প্রার্থী আগাম জানান দিয়েছেন।
প্রার্থীরা হলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য প্রকৌশলী এ.কে.এম ফজলুল হক চাঁন। তিনি দুই মেয়াদে এ আসনের সংসদ সদস্য। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে এ আসনের জন্য মনোনয়ন চাইবেন। সে উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে তিনি মাঠ পর্যায়ের সাধারণ ভোটার ও নেতা-কর্মীদের সাথে মত বিনিময়সহ মিটিং সমাবেশ করে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
দুই মেয়াদে এমপি থাকায় দুই উপজেলায় গ্রমীণ অবকাঠামো রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ নির্মাণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণ, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, বিদ্যুতায়নের কাজসহ বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কাজ করেছেন। এনিয়ে তার সাথে কথা হলে তিনি জানান, দুই মেয়াদে এপর্যন্ত দুই উপজেলায় আমার হাত দিয়ে প্রায় ষোল শত কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়ন মুলক কাজ করেছি। মনোনয়নের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দলীয় হাই কমান্ড যদি আমাকে মনোনয়ন দেন তাহলে আমি পুণরায় এমপি নির্বাচিত হবো।
শেরপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি ও আশির দশকের ছাত্র নেতা ইফতেখার হোসেন কাফি জুবেরী ১৯৯১ সাল থেকে এ আসনের জন্য আ’লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়ে আসছেন। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মনোনয়ন চাইবেন। তিনিও মনোনয়নের প্রত্যাশায় চেষ্টা তদবির ও লবিং করে যাচ্ছেন।
শ্রীবরদী উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক মোতাহারুল ইসলাম লিটন সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে আগামী নির্বাচনে এ আসন থেকে মনোনয়নের প্রত্যাশা করছেন। সেই সাথে তিনি দলের বিভিন্ন মিটিং সমাবেশ ও গত রমজান মাসে ইফতার পার্টিতে প্রার্থীতার কথা জানান দিয়েছেন।
সাবেক সংসদ সদস্য (জাপা) ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খন্দকার মুহম্মদ খুররম ২০০৮ সাল থেকে মনোনয়ন চেয়ে আসছেন। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ’লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেছিলেন। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি আ’লীগ থেকে মনোনয়নের প্রত্যাশা করছেন।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার আবু ছালেহ মো: নুরুল ইসলাম হিরু মনোনয়নের প্রত্যাশার কথা জানান দিয়েছেন। সে উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ভোটার ও নেতাকর্মীদের সাথে তিনি শুভেচ্ছা বিনিময় করে যাচ্ছেন।
খড়িয়া কাজির চর ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা আ’লীগ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ইয়াং ক্রেজ এ.ডি.এম শহিদুল ইসলাম কর্মী সমাবেশের মধ্য দিয়ে মনোনয়নের প্রত্যাশী হিসাবে আগাম জানান দিয়েছেন। সেই সাথে পোস্টার করে ভোটার ও কর্মীদের সাথে শুভেচ্ছা এবং মত বিনিময় করে যাচ্ছেন।
জেলা মহিলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক নাসরিন বেগম ফাতেমা মনোনয়নের জন্য লবিং করছেন। পোস্টার ও লিফলেট করে সাধারন ভোটার নেতা-কর্মীদের সাথে শুভেচ্ছা এবং মত বিনিময় করে যাচ্ছেন। প্রয়াত সংসদ সদস্য এম এ বারী সাহেবের ছেলে মহসীনুল বারী রুমি মনোনয়নের প্রত্যাশা করছেন।
মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. ওয়ালীউজ্জামান আশরাফি লতা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে মনোনয়ন চেয়ে আসছেন। আগামী নির্বাচনেও মনোনয়নের প্রত্যাশা করছেন।
সদ্য জাপা থেকে আ’লীগে যোগদান করেছেন প্রবাসী শিল্পপতি হেদায়েতুল ইসলাম হেদা। তিনিও আ’লীগ থেকে মনোনয়নের প্রত্যাশা করছেন।
ঝিনাইগাতি উপজেলা আ’লীগ সভাপতি এস.এম.এ ওয়ারেজ নাঈম দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে আ’লীগের মনোনয়ন চেয়ে আসছেন। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নের প্রত্যাশায় পোস্টার লিফলেট করে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারন ভোটারদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করে যাচ্ছেন।
সাধারন সম্পাদক আমিরুজ্জামান লেবু ও প্রার্থীতার কথা জানান দিয়েছেন। এদের মধ্যে নৌকার টিকেট কে পাবেন এখন পর্যন্ত সুনিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। এলাকায় কারও কারও গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠলেও নৌকা পেলেই এমপি হবেন এমন ধারনা নিয়েই অনেকেই মনোনয়ন চাইছেন।
অপরদিকে বিএনপি’র হেভি ওয়েট প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য মাহমুদুল হক রুবেল দুই মেয়াদে এ আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি এ আসনে প্রার্থী হবেন।
জাপা থেকে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম ফর্সা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ’লীগ প্রার্থী প্রকৌশলী এ.কে.এম ফজলুল হক চাঁনের সাথে প্রতিদ্বন্দিতা করে পরাজিত হয়েছিলেন। আগামী নির্বাচনেও তিনি জাপা থেকে প্রার্থীতার কথা জানান দিয়েছেন। এছাড়া হাসান খালেদ কাজল জাপা থেকে মনোনয়নের প্রত্যাশা করছেন।
শ্রীবরদী উপজেলা শাখার জামায়াতে ইসলামের সাবেক আমীর নুরুজ্জামান বাদল বিশ দলীয় ঐক্যজোট থেকে মনোনয়ন চাইবেন। জোট থেকে মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করার জানান দিয়েছেন।