করোনা মহামারীর কারণে ১৭ মাস ২৫ দিন পর খুলেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রাণ ফিরেছে প্রতিটি ক্যাম্পাসে। চিরচেনা রুপে শেরপুরের ১ হাজার ২২৬ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাশ রুম।
রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সকল নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে শেরপুরের সকল প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজে শুরু হয়েছে পাঠদান। প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরেছে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে। দীর্ঘদিন পর ক্লাশে এসে উচ্ছ¡সিত শিক্ষার্থীরা।
জেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্যমতে, রবিবার জেলার ৭৪২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৮১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১০৪টি মাদ্রাসা, ৮০টি কিন্ডারগার্ডেন স্কুল, ৯০টি কিন্ডারগার্ডেন মাদ্রাসা ও ২৯টি কলেজে একযোগে ক্লাশরুমে পাঠদান শুরু হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সকল প্রতিষ্ঠানে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে পাঠদানের উপযোগী করে প্রস্তুত করা হয়েছে।
রবিবার সকাল থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন পর প্রতিষ্ঠান খোলায় নেয়া হয়েছে বাড়তি সতকর্তা। শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নতুন করে বসানো হয়েছে হাত ধোয়ার জন্য বেসিন, সুপেয় পানির ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসানো হয়েছে শিক্ষার্থীদের। রাখা হয়েছে মাস্ক ও হ্যান্ড সেনিটাইজার।
সকাল থেকে দুইটি শিফটে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু হয়েছে। ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের ক্লাশে পাঠিয়ে অভিভাবকদের বাইরে অবস্থান করতে দেখা গেছে। জনসমাগম এড়াতে বাদ দেয়া হয়েছে এসেম্বলি, টিফিন সরবরাহেও নিষেধ করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের।
শেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা এ্যানি সুরাইয়া মিলোজ বলেন, দীর্ঘদিন পর স্কুলে আসতে পেরে শিক্ষার্থীরা বেশ আনন্দিত। আজ পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাশ চলছে। নির্দেশনা মেনে আমরা শিফট ও শ্রেণি ভাগ করে নতুন করে রুটিন প্রণয়ন করেছি।
শেরপুর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ বলেন, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মানাতে কলেজে বিএনসিসি ও ক্যাডেট সদস্যরা কাজ করছে। ২০২১ সালের পরীক্ষার্থী ও ২০২২ সালের পরীক্ষার্থীদের জন্য পাঠদান শুরু করেছি আমরা। পরবর্তীতে সব স্বাভাবিক হলে আমরা অন্য ক্লাশগুলোও শুরু করবো। দীর্ঘ সময়ে একটা গ্যাপ হয়েছে পড়াশুনায়। আমরা নিয়মিত ক্লাশ চালানোর সুযোগ পেলে সে গ্যাপটাও পূরণ করতে পারবো।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফেরদৌসী বেগম জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুরো জেলার ৭৪২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একযোগে পাঠদান শুরু হয়েছে। এরআগে আমরা সকল স্কুল পাঠদান উপযোগী করেছি শিক্ষার্থীদের জন্য। শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসতে পেরে বেশ আনন্দিত।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রেজুয়ান বলেন, দীর্ঘদিন পর বিদ্যালয় খুলেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ক্লাশরুমে পাঠদান শুরু হয়েছে। প্রথমদিনে শিক্ষার্থী উপস্থিতি সন্তোষজনক। শিক্ষকদের নিবিড় তত্বাবধানে শিক্ষার্থীরা তাদের পাঠ কার্যক্রম আবার শুরু করবে।