শেরপুরে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদ- হয়েছে। শেরপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোসলেহ উদ্দিন ১৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে এ সাজার রায় ঘোষণা করেছেন।
সাজাপ্রাপ্ত আমিনুল ইসলাম (৩৮) শ্রীবরদী উপজেলার ভায়াডাঙ্গা গ্রামের ওহাব ম-লের ছেলে। সাজাপ্রাপ্ত আমিনুলের উপস্থিতিতে রায়ে একইসাথে ১০ হাজার জরিমানা অনাদায়ে ৪ মাসের কারাদ- ঘোষণা করা হয়েছে এবং অপরাধ প্রমাণ না হওয়ায় অপর ৪ আসামীকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে।
আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট ইমাম হোসেন ঠান্ডু রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি মামলার নথির উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, শেরপুর সদর উপজেলার সন্ন্যাসীর চর গ্রামের শাহজাহান মিয়ার মেয়ে শিখা বেগমের সাথে শ্রীবরদী উপজেলার ভায়াডাঙ্গা গ্রামের ওহাব ম-লের ছেলে আমিনুলের বিয়ে হয়। বিয়ের প্রায় ৬ বছর পর স্বামী আমিনুলের পরনারীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্ত্রী শিখা বেগমের সাথে দাম্পত্য কলহ সৃষ্টি হয়।
একপর্যায়ে ২০১৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আমিনুল তার স্ত্রী শিখা বেগমকে শ^াসরোধে হত্যা করে লাশ গোয়ালঘরের ধর্নার সাথে ঝুলিয়ে রেখে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করে। নিহতের ভাই জুবাইদুল ইসলাম এ ঘটনায় তার বোনকে হত্যা করে মৃতদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে দাফনের প্রস্তুতি নেওয়ার অভিযোগে শ্রীবরদী থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলায় বোনজামাই আমিনুল ইসলাম সহ ৬ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামী করা হয়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে শিখা বেগমের লাশের ময়মনাতদন্তের প্রতিবেদনে হত্যার আলামত পাওয়ায় পুলিশ স্বামী আমিনুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।
পরে আমিনুল আদালতে স্ত্রীকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয়। এ ঘটনায় শ্রীবরদী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম স্বামী আমিনুল ইসলাম সহ ৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৬ সালের ২৮ জুন আদালতে চার্জশীট (অভিযোগপত্র) দাখিল করে।
বিচারিক প্রক্রিয়ায় ১১ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার আমিনুল ইসলামকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- ঘোষণা করে এবং অপর ৪ জনকে বেকসুর খালাস প্রদান করে।