শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ ফিরোজ আল মামুন সস্ত্রীক করোনা আক্রান্ত। স্ত্রী তৌফিকুন নাহার শেরপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষক(অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা)। দু’জনই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন আছেন।
করোনার সন্মুখ যোদ্ধা, আলোচিত নির্বাহী কর্মকর্তার করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর শেরপুরের সর্ব মহলে আলোচনা এসেছে। মানুষের অভিমত করোনা কালিন মানুষের পাশে থাকার জন্য অত্যন্ত পরিচিত মুখ এই ইএনও এখন নিজেই আক্রান্ত হয়ে লড়ছেন। করোনায় লক ডাউন চলাকালিন ফিরোজ আল মামুন ছিলেন অন্তত সক্রিয়। নিজে ও তার নানা সোর্স দিয়ে বয়স্ক,দরিদ্র,কর্মহীন,দরিদ্র মানুষদের খোঁজেখোঁজে বের করে সরকারি সহয়তা দিয়েছেন। গনমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন সাহায্যের আবেদন পেলেই গুরুত্ব দিতেন। সহযোগীতা চাইলে করোনায় আক্রান্তদের বাড়ীতে রাত দুপুরে পাওয়া যেত ফিরোজ আল মামুনকে। দীর্ঘ করোনার সময় ধরেই উপজেলার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে সরব উপস্থিতি ছিল তার।সম্প্রতি বন্যা কালিন বন্যা দূর্গত শেরপুরের বৃহত্তর চরাঞ্চলে জুড়ে তার পদচারনা ছিল চোখে পড়ার মত। করোনা ও বন্যা কালিন দলমত নির্বিশেষে সহযোগীতার জন্য সরকারি এই কর্মকর্তা গ্রামাঞ্চলের অতি সাধারন মানুষের কাছে বেশ পরিচিত।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরেই ইউএনও ফিরোজ আল মামুন জ্বর-সর্দিকাশি, শরীর ব্যাথা, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। ২৬ আগস্ট বুধবার শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে নমুনা দেওয়ার পর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবের পরীক্ষার ফলাফল ‘কোভিড-১৯ নেগেটিভ’ আসে। রিপোর্ট নেগেটিভ আসলেও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় ২৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৯ আগস্ট শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইএনও এবং তার স্ত্রীর নমুনা পরীক্ষায় ‘কোভিড-১৯ পজিটিভ’ আসে। পরে স্বামী স্ত্রী দুজনকেই ওই হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। শেরপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ ওয়ালীউর রহমান জানান এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা হামিদুর রহমান জানান, ইউএনও ফিরোজ আল মামুনের নমুনায় করোনার সাথে ডেঙ্গুও পজেটিভ পাওয়া গেছে। তার করোনা এবং ডেঙ্গুর চিকিৎসা চলছে। ঢাকা মেডিক্যাল সূত্র ও শেরপুর জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে করোনায় আক্রান্ত ইএনওর স্ত্রী অনেকটা সুস্থ আছেন।তবে নির্বাহী কর্মকর্তার খানিকটা শ্বাসকষ্ট, কাশি ও গলা ব্যথা আছে।তাকে নিয়মিত অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে।জেলা প্রশাসন ও পরিবারের পক্ষ থেকে নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্ত্রীর জন্য দোয় চাওয়া হয়েছে।