শেরপুরে শ্বাসরোধে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে মোঃ সোলায়মান (৩৯) নামে এক যুবকের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- ও ১০ হাজার টাকা অর্থদ- অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। ১৮ এপ্রিল বুধবার বিকেলে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এমএ নূর আসামীর উপস্থিতিতে ওই রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত সোলায়মান সদর উপজেলার বলাইয়েরচর দক্ষিণপাড়া গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে। একইসাথে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সোলায়মানের বাবা জালাল উদ্দিন (৬০) ও মা হাসনা বেগম (৫০) কে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।
আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সোলায়মান একই উপজেলার পার্শ্ববর্তী চকসাহাব্দী চরদুবলাই গ্রামের গোলাম মোস্তফার মেয়ে শিখা বেগমকে সম্পর্কের সূত্রে বিয়ে করে। বিয়ের ১ বছরের মাথায় তাদের ঘরে জন্ম নেয় এক পুত্র সন্তান। এরপর স্ত্রী শিখার প্রতি নানাভাবে শুরু হয় অত্যাচার-নির্যাতন। ওই অবস্থায় ২০১৩ সালের ১৫ জুলাই শিখাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে তার মুখে বিষ ঢেলে আত্মহত্যার প্রচার চালালে পিতার বাড়ির লোকজন খবর পেয়ে থানা পুলিশের সহায়তায় শ্বশুরালয় থেকে তার লাশ উদ্ধার করে। ওই ঘটনায় পরদিন শিখার বাবা গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে স্বামী, সোলায়মান ও শ্বশুর-শ্বাশুড়িকে আসামী করে সদর থানা একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে সদর থানার এসআই আব্দুল্লাহ আল মামুন পরের বছর ১২ মে ওই ৩ জনের বিরুদ্ধেই বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় বিচারিক পর্যায়ে সংবাদদাতা বাদী ও চিকিৎসকসহ ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
এদিকে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এমএ নূর শেরপুরে যোগদানের পর থেকে জজশীপ ও ম্যাজিস্ট্রেসীর বিচারিক ক্ষেত্রে গতিশীলতা ফিরে এসেছে। ১ মার্চ যোগদানের পর থেকে তার আদালতে এ পর্যন্ত ৫টি মামলায় রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫ এপ্রিল চেক প্রতারণার এক মামলায় হাসিবুল হাসনাত নামে একজনকে একমাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড সহ প্রায় ২ লক্ষ টাকা জরিমানা, ১১ মার্চ নাশকতার এক মামলায় আব্দুস সামাদ (৫৫) নামে এক ব্যক্তির ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদন্ড এবং ১৪ মার্চ ভ্রুণ হত্যার দায়ে মফিজুল হক (৫০) নামে এক ব্যক্তির ৫ বছরের সশ্রম কারাদ- ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদন্ড দেয় আদালত।