শেরপুরে শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের স্বেচ্ছাশ্রমে ব্যতিক্রমি কার্যক্রম চলছে। জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলার চেংগুরিয়া কালিবাড়ীস্থ “দরিদ্র ও অসহায় শিক্ষার্থী উন্নয়ন সংস্থা (ডপস)” এ উদ্যোগ নিয়েছে।
জানা গেছে, প্রায় ১১ বছর পূর্বে সেনাসদস্য মো. শাহিন মিয়া’র স্বেচ্ছাশ্রমে প্রতিষ্ঠিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ডপস’ জেলার সদর উপজেলাসহ সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার প্রত্যান্ত এলাকায় হত দরিদ্র শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধে কাজ করে আসছেন। ইতিমধ্যে ওই সংগঠনের উপকারভোগী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩ জন এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নত রয়েছে।
পাশাপাশি শেরপুর, ঢাকা ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন কলেজে এসএসসিতে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ২২ জন শিক্ষার্থী এইচএসসিতে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষে লেখাপড়া করছে। এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে বাল্য বিবাহের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া কিশোরী, গার্মেন্টসে যোগ দেওয়া শ্রমিক, দিনমজুর সহ বিভিন্ন পেশায় কর্মরত ছেলে ও মেয়েদের শিক্ষাজীবনে ফিরিয়ে এনেছে এ সংগঠন।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা শাহিন মিয়া, বিএসপি শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধে তার এই অদম্য কার্যক্রম ও ইচ্ছা শক্তি’র ধারাবাহিকতায় সপ্তাহব্যাপী জেলার বিভিন্ন স্কুল মাঠে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘ঝরে পড়া রোধ ও শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে’ মাঠ বৈঠকের আয়োজন করে আসছে। এতে সংগঠনের উপকারভোগী সদস্য বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা তাদের ঝড়ে পড়া থেকে আবারও শিক্ষা জীবনে ফিরে আসার সংগ্রামী জীবন চিত্র তুলে ধরেন এবং গ্রামের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় আরো মনোযোগী হওয়ার জন্য শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে বক্তব্য রাখেন।
এসব মাঠ বৈঠকে বক্তব্য রাখেন উপকারভোগী ডপস সদস্য আমিনুল ইসলাম (ঢাবি), আব্দুল হাকিম (বশেমুরবিপ্রবি), রাসেল মিয়া (ঢাবি), শ্যামল পারভেজ (ঢাবি), সাইদুর রহমান (জাবি), আব্দুল আলিম (জাবি), রমজান আলী (নোবিপ্রবি) ফরিদুল ইসলাম (ইবি), রুকনুজ্জামান (চবি)। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করছেন ডপসের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক শাহিন মিয়া, বিএসপি।
ইতিমধ্যে ডপস এর নানা কার্যকমের মধ্যে গত ২১ ডিসেম্বর শ্রীবর্দী উপজেলার কুরুয়া হাইস্কুল মাঠে, ২৩ ডিসেম্বর নালিতাবাড়ি উপজেলার নন্নী হাইস্কুল মাঠে, ২৪ ডিসেম্বর সদর উপজেলার গাজির খামার ইউনিয়নের শহীদ গোলাম মোস্তফা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ মাঠে এবং ২৫ ডিসেম্বর ঝিনাইগাতি উপজেলার রাংটিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ধারাবাহিক ভাবে ২৬ ডিসেম্বর নালিতাবাড়ি উপজেলার সমশ্চুরা হাইস্কুল মাঠে এবং ২৮ ডিসেম্বর সর্বশেষ ঝিনাইগাতি উপজেলার মালিঝিকান্দা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে মাঠ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ২২ ডিসেম্বর সংগঠনের নিজস্ব কার্যালয়ে ডপস সদস্য কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে মোটিভেশন সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শাহিন মিয়া, বিএসপি জানায়, আমাদের কার্যক্রমকে সহযোগীতা করতে সরকারী, বেসরকারী এবং বিত্তবানরা যদি এগিয়ে আসে তবে শিক্ষায় পিছিয়ে থাকা শেরপুর জেলায় ঝরে পড়া রোধসহ শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন এবং শিক্ষার হার আরো বেড়ে যাবে।