শেরপুরে রবিবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে ইঁদুরের প্রতিকী মৃত্যুদন্ড কার্যকরের মধ্যদিয়ে মাসব্যাপী ইঁদুর নিধন অভিযান উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব।
এ উপলক্ষে খামারবাড়ীর প্রশিক্ষণ হলে ‘আসুন, সম্পদ ও ফসল রক্ষায় সম্মিলিতভাবে ইঁদুর নিধন করি’ প্রতিপাদ্য বিষয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে ইঁদুর নিধনের কারণ ও কলাকৌশল সম্পর্কে মুলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শস্য সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ মো. আক্তারুজ্জামান। এতে বলা হয়, প্রতিবছর ইঁদুরের আক্রমণে বাংলাদেশে প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ টন খাদ্য-শস্য নষ্ট হয়।
প্রতি বছর যে পরিমাণ খাবার ইঁদুর নষ্ট করে তা দিয়ে ৫০ থেকে ৫৪ লাখ লোকের খাবারের সংস্থান করা সম্ভব। ইঁদুর ছোট প্রাণি হলেও এর ক্ষতির ব্যাপকতা অনেক। কৃষকের উৎপাদিত ফসলের একটি বড় অংশ ইঁদুর নষ্ট করে। আমাদের দেশে ইঁদুরের কারণে প্রতিবছর দেড় থেকে দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়। এটি মানব স্বাস্থ্যের জন্যও হুমকিস্বরূপ। এর মলমূত্র ও লোম খাবারের সাথে মিশে টাইফয়েড, জন্ডিস, চর্মরোগ, প্লেগ,কৃমিসহ ৬০ প্রকারের মারত্মক রোগ ছড়ায়। এছাড়া সেচ-নালা, কাপড়, আসবাবপত্র, বৈদ্যুতিক ও টেলিফোনের তার, রাস্তা কেটে নষ্ট করে। একজোড়া ইঁদুর বছরের অন্তত ১২ কেজি খাবার নষ্ট করে। প্রতিবছর শেরপুরে ইঁদুর যে পরিমাণ খাদ্যশস্য নষ্ট করে তা দিয়ে জেলার অধিবাসীদের প্রায় ৪ বছর পর্যন্ত খাবারের যোগান দেওয়া সম্ভব।
শেরপুর খামারবাড়ীর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আশরাফ উদ্দিনের সভাপেিত্ব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব বক্তব্য রাখেন। অন্যান্যের মাঝে বিশেষ অতিথি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজ আল আমুন, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পিকন কুমার সাহা, উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তার করিম, ইঁদুর নিধনে পুরষ্কারপ্রাপ্ত ফুলপুরের কৃষক ক্বারি ফজলুল হক আকন্দ, কৃষক কবি নকলার আব্দুল হালিম, স্থানীয়ভাবে ইঁদুর নিধন প্রযুক্তি উদ্ভাবব সুলতান মাহমুদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তা, উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা, সাংবাদিক, কৃষক-কৃষানী সহ শতাধিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। পরে ফাঁদে বন্দি করা একটি ইঁদুরকে বালতি ভর্তি পানিতে চুবিয়ে ইঁদুরের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।