শেরপুরে অভিনব প্রতারনার মাধ্যমে বিদেশ ফেরত এক যুবকের ৮ লক্ষ টাকা আত্নসাৎ করার অভিযোগে মো: সাইদুল ইসলাম (৩৫) নামে এক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছে প্রতারিত ভাগ্যবিড়ম্বিত ওই যুবক। অভিযুক্ত সাইদুল ঝিনাইগাতী উপজেলার বানিয়াপাড়া গ্রামের মৃত রাজ মামুদের ছেলে।
এদিকে এ মামলা দায়েরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আসামী পক্ষের লোকজন বাদী মুস্তাফিজুর রহমান কাজল ও তার পরিবারকে খুন জখম, মিথ্যা মামলা দায়ের করার হুমকি ধামকি দিচ্ছে বলে ঝিনাইগাতী থানায় আরো একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মামলা বাদী ও আসামী একই গ্রামের নিকটতম প্রতিবেশী ও সর্ম্পকে মামা বলে সম্মোধন করেন । সেই সুবাধে ঘনিষ্ঠতার সূত্র ধরে বিভিন্ন সময় একে অন্যের ব্যাংক একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করে থাকতো । ঘটনার দিন ২ অক্টোবর বাদী মুস্তাফিজুর রহমান কাজলের নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাও জরুরী ব্যাক্তিগত কাজ থাকায় অভিযুক্ত সাইদুলকে শেরপুর শহরে যাবে কিনা জানতে চাইলে সাইদুল জানান সে শহরে যাবে । তখন বাদী মুস্তাফিজ বরাবরের ন্যায় সাইদুলকে সাইদুলের নামে যমুনা ব্যাংক শেরপুর শাখার অনুকুলে ৮ লক্ষ টাকার একটি চেক প্রদান করে টাকাগুলো উত্তোলন করে দেয়ার অনুরোধ করে । সাইদুল সম্মত হয়ে চেক নিয়ে শহরে চলে যায় এবং ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে টাকা উত্তোলনের বিষয়টি মুস্তাফিজকে মোবাইল ফোনে নিশ্চিত করেন।
কিন্তু তার কিছু সময় পর থেকে সাইদুলের কাছ থেকে টাকা ফেরত নেয়ার জন্য বার বার ফোন দেয়া হলেও সাইদুল ফোন রিসিভ করেননি। পরে সারা রাত চেষ্টা করেও সাইদুলের হদিস না পেয়ে বাদী মুস্তাফিজ চিন্তিত হয়ে পড়লে ঘটনার পরেরদিন তিনি জানতে পারেন অভিযুক্ত সাইদুল শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন ।
মুস্তাফিজ হাসপাতালে এসে সাইদুল কে টাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে সে একেক সময় একেক কথা বলে জানায় ছিনতাই কারীরা তাকে মারধোর করে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে । যা একটি নাটক ছাড়া আর কিছুই না । কারণ ওই দিনই অভিযুক্ত সাইদুল হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ঘটনাস্থল শেরপুর সদর থানা পুলিশ কে বিষয়টি অবগত করলে পুলিশ সাইদুলের বাড়ীতে গেলে সাইদুল মোবাইল ফোনে বাদী মুস্তাফিজুর রহমান কাজলকে মামলা না করার শর্তে ৫,৫০,০০০ টাকা ফিরত দেয়ার কথা জানান । যার মোবাইল ফোন রেকর্ড বাদী মুস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের প্রদান করেছেন।
এব্যাপারে অভিযুক্ত সাইদুলের দুটি মোবাইল নাম্বারে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন দুটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে হুমকি ও মারধোরের ঘটনায় একটি সাধারণ ডাইরি আমাদের থানায় করা হয়েছে , আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
এ বিষয়ে শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, এ ধরণের প্রতারণার একটি ঘটনা আমরা শুনেছি এবং এ বিষয়ে আদালত থেকে একটি নির্দেশনা পেয়েছি যা শেরপুর সদর থানা তদন্ত করছে অন্যদিকে মামলার বাদীকে হুমকি ধামকি দেয়ার একটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি যা ঝিনাইগাতী থানা তদন্ত করছে । তদন্ত শেষে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।