বিধি না মেনে নিয়ম বহির্ভুত ভাবে রাস্তার দুই ধারে বেড়ে উঠা সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে শেরপুর সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের আঃ হাই’র বিরুদ্ধে।
পরে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তনকৃত গাছগুলো জব্দ করেন। এর আগে, বুধবার সন্ধ্যার দিকে চেয়ারম্যান ওই গাছগুলো কাটার নির্দেশ দেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার কুসুমহাটি থেকে ইলশা বাজার মুখী বেশ কয়েক বছরের পুরনো অনেক গুলো গাছ সৌন্দর্য বর্ধন করে ছায়া দিয়ে আসছে। এই পথে চলাচল করে কয়েক গ্রামের হাজারো মানুষ।
এতে করে মাথার উপরে পথিককে রোদের তাবদাহ থেকে রক্ষা করত এই গাছগুলো। শুধু তাই নয়, গাছগুলো থাকার ফলে রাস্তার দুই ধারের মাটি ভেঙ্গে যেত না।
কিন্তু বুধবার (২০ জুলাই) সন্ধ্যায় কোন নিয়মশৃঙ্খলা ও আইনকানুন না মেনে চেয়ারম্যান আঃ হাই এসব গাছ কাটার নির্দেশ দেন। পরে গাছগুলো সরিয়ে নেন চেয়ারম্যানের লোকজন।
স্থানীয় একাধিক লোক বলেন, বুধবার চেয়ারম্যান ও তার সহযোগিরা যোগসাজসে রাস্তার ধারে গাছ কেটে সাবাড় করেছে। অথচ এই গাছ কাটা দেখার বা রোধ করার কেউ নেই।
লছমনপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা বলেন, আমি লোকমুখে শুনেছি চেয়ারম্যান সাহেবের নির্দেশে উনার লোকজন গাছ গুলো কেটে নিয়েছেন। পরে উপজেলা প্রশাসন গাছগুলো জব্দ করেন। এটার নিন্দা জানাই।
স্থানীয় বাসিন্দা আলাল উদ্দিন বলেন, ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে গাছ কাটার ব্যাপারে প্রতিরোধ করা হয়েছে, কিন্তু তারা মানেননি। তারা বলেছেন উপরের নির্দেশেই গাছ কাটা হচ্ছে।
পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মেরাজ উদ্দিন বলেন, সরকারী বিধি না মেনে গাছ কর্তন করা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
তবে এব্যাপারে লছমনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের আঃ হাই বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। কে বা কাহারা গাছ কেটেছে তা আমি কিছুই জানি না।
শেরপুর সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুর রেজ্জাক বলেন, সরকারি যত গাছ আছে তা বিক্রি করতে হলে বন বিভাগের অনাপত্তিপত্র নিতে হবে এবং বন বিভাগ কর্তৃক মূল্য নির্ধারণ করিয়ে নিতে হবে। এসব নিয়ম না মানলে সেটি অবৈধ হবে।
শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহনাজ ফেরদৌস সাংবাদিকদের জানান, রাস্তার ধারে গাছ কাটা হয়েছে শুনার পর পরই কর্তনকৃত গাছগুলো জব্দ করে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।