শেরপুরের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমে বিপদসীমার নিচ (১৬.৬৫ সে.মি) দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে শেরপুর-জামালপুর মহাসড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় এখন পর্যন্ত শেরপুরের সাথে জামালপুর হয়ে উত্তরাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। প্লাবিত এলাকার পানি কমতে শুরু করলেও এখনো ত্রাণ পৌঁছায়নি অধিকাংশ পানি বন্দিদের ঘরে।
টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে জেলার ৪২টি ইউনিয়নের ২শ ৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানি বন্দী রয়েছে লক্ষাধিক মানুষ, এ পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন জায়গায় বন্যার পানিতে ডুবে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও ত্রাণ না পাওয়ায় জনজীবনে ফিরেনি স্বস্তি। বন্যা দূর্গতদের মধ্যে এ পর্যন্ত ১০৫ মে.টন চাল ও দেড় লাখ টাকা বিতরণ করেছে জেলা প্রশাসন। স্থানীয় সাংসদ, জেলা পুলিশ ও বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকেও ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে পানি বন্দিদের মাঝে। এখনো বেশ কিছু এলাকায় পৌঁছায়নি ত্রাণ সহযোগিতা, এমনাটাই অভিযোগ বানভাসী মানুষদের।
এদিকে জেলায় রোপা আমনের বীজতলা, সবজি, আউশ আবাদ, পাট ও ফলবাগান নষ্ট হয়ে প্রায় ৩০ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৩ হাজার ১৩২টি মৎস্য খামার, পুকুর ডুবে ও পাড় ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২ হাজার ৪০৬ জন কৃষক। মাছ ও পোনা ভেসে গিয়ে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২১ কোটি ২৯ লাখ টাকা। সাধারণ মানুষের হাঁস-মুরগি মরে ও খামার ভেসে প্রাণিসম্পদ বিভাগের আওতায় ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা। আর বন্যায় প্রাণহানি হয়েছে ২৫টি গবাদি পশুর। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় ৩৭৯টি নলকূপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে শেরপুর-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পোড়ার দোকান এলাকায় কজওয়েসহ পাকা-কাঁচা মিলে এলজিইডি ও সওজ বিভাগের বেশ কিছু রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বুধবার জেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানান ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তরের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) এটিএম কামরুল ইসলাম।