শেরপুরে কবি সংঘ বাংলাদেশ’র সংবর্ধনায় অভিষিক্ত হয়েছেন সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি, জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি, বিশিষ্ট কবি, সাংবাদিক ও সংগঠক এডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধার।
৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলা আইনজীবী সমিতির ২নং ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি, বিশিষ্ট সমাজসেবী রাজিয়া সামাদ ডালিয়া। ওইসময় তিনি বলেন, একজন মানুষ যখন তিলে তিলে যোগ্য হয়ে উঠে, উঁচু জায়গায় যায়- মূল্যায়নের মাধ্যমে তার স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন। আর সেই স্বীকৃতি অন্যদেরকেও যোগ্য হয়ে উঠতে উৎসাহিত করে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, রফিকুল ইসলাম আধার আজ নিজের যোগ্যতায় যে স্থান করে নিয়েছেন, আগামী দিনে তার সাহসিকতায় মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় দুর্নীতিমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
মূখ্য আলোচক সাপ্তাহিক জয়’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, বিশিষ্ট সংগঠক-শিক্ষাবিদ এডভোকেট মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, তৃণমূল থেকে উঠে আসা একসময়ের চারণ কবি, সাংবাদিক আধার আজ তার মেধা, আচরণ ও যোগ্যতায় স্থানীয় কবি-সাংবাদিকদের শীর্ষ অবস্থান উতরিয়ে আইনজীবী সমাজের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছেন। সবকিছুর বাইরেও সাধারণ মানুষের সাথে তার যে নিবির সম্পর্ক তা সত্যিই ঈর্ষণীয়। জনসেবায় অবদান রাখতে তার মতো লোকের সঠিক অবস্থানও নির্ণিত হওয়া প্রয়োজন।
কবি সংঘ বাংলাদেশ’র সভাপতি, বিশিষ্ট কবি সাংবাদিক ও কলামিস্ট তালাত মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট খন্দকার মাহবুবুল আলম রকীব, জেলা বিকেবি অফিসার্স কল্যাণ সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম মোস্তফা আকন্দ, জেলা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লুৎফুন্নাহার ও প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাবিহা জামান শাপলা।
মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন কবি সংঘ বাংলাদেশ’র সাধারণ সম্পাদক, অধ্যাপক ড. আবদুল আলীম তালুকদার। আলোচনায় অংশ নেন কবি সংঘ’র সহ-সভাপতি অধ্যাপক মোস্তফা জিন্নাহ ও কবি আরিফ হাসান। কবি সংঘ’র তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আইয়ুব আকন্দ বিদ্যুতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জেলা আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি এডভোকেট হরিদাস সাহা, সাবেক সহ-সভাপতি এডভোকেট মোঃ সুরুজ্জামান, সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শাহীদ উল্লাহ শাহী, সদর উপজেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান আহমেদ, সমাজসেবক মাছুদুল আলম সরকার, সাবেক ছাত্রনেতা শাহ আলম, কবি কামরুজ্জামান বাদল প্রমুখ।
সংবর্ধিত আধারের রচিত কবিতা পাঠ করেন ছড়াকার মোস্তাফিজুল হক ও শিশু আবৃত্তিকার সুমাইয়া খানম সাবা। স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কবি মহিউদ্দিন বিন্ জুবায়েদ, হাসান শরাফত, মঞ্জুরুল হক, রবিউল আলম টুকু, কালাম বিন আব্দুর রশিদ, ব্রিজেট বেবী, সাগর আহমেদ, জান্নাতুল রিকসোনা প্রমুখ।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট খন্দকার মাহবুবুল আলম রকীব বলেন, রফিকুল ইসলাম আধার একজন ত্রি-মাত্রিক বা বহুমাত্রিক ব্যক্তিত্বের অধিকারী। একজন সফল ও ব্যস্ত আইনজীবী হয়েও তিনি সাহিত্য ও সাংবাদিকতাকে যেমন আঁকড়ে রেখেছেন, ঠিক তেমনি সমাজসেবার মধ্য দিয়ে তিনি মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠছেন।
কেন্দ্রীয় খেলাঘরের প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট ইমাম হোসেন ঠান্ডু বলেন, যে সমাজ গুণীদের মূল্য দিতে পারে না, সে সমাজ কখনোই সামনের দিকে এগুতে পারে না। মুক্তবুদ্ধির কবি-সাহিত্যিকরা এ সময়ের তারুণ্যদীপ্ত সংগঠক রফিকুল ইসলাম আধারকে তার অবস্থানের স্বীকৃতি দিয়ে নিজেরাও মূল্যায়িত হলেন।
মূল প্রবন্ধে ড. আবদুল আলীম তালুকদার বলেন, রফিকুল ইসলাম আধার এই সময়ের এক ব্যতিক্রমধর্মী ব্যক্তিত্ব। একজন অনন্য চেতনাসমৃদ্ধ সৃজনশীল মেধাবী মানুষের নাম। তারুণ্যদীপ্ত চিন্তা-চেতনার ভারে নত এই মানুষটি নীরবে-নিভৃতে তিলে তিলে যা সঞ্চয় করেছেন এবং যে কর্মযজ্ঞের ক্ষেত্র তৈরি করেছেন তা অবগত হয়ে অনেকেই অবাক বনে যায়। ধৈর্য, ত্যাগ ও অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ এ মানুষটির যাত্রা হোক এখন ‘ইনডোর থেকে আউটডোর’এ- এমন প্রত্যাশা সচেতন মহলসহ অনেকের।
কবি সংঘ’র সভাপতি তালাত মাহমুদ বলেন, আমরা জানি, ইতিহাস দেশপ্রেমিকের জন্ম দেয়, আবার দেশপ্রেমিকই ইতিহাস সৃষ্টি করে। অথচ আজ মানুষের কাছে ভালোবাসা নেই, আছে শুধু স্বার্থের রসিকতা। এমন কথার ভীড়ে এডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধারের মত মানবপ্রেমিক মানুষেরা টিকে থাকবে এটা ভাবাই যায় না। অথচ তিনি টিকে আছেন এবং টিকে থাকবেন দুঃস্থ ও অসহায় মানুষের জন্য। সেইসাথে আমাদের অত্যন্ত প্রিয় মানুষ কবি-সাংবাদিক-সংগঠক ও সফল আইনজীবী রফিকুল ইসলাম আধার তার কর্মনৈপূণ্যের মাধ্যমে আগামীদিনে মানুষের সেবায় নিজের অবস্থানকে আরও মসৃণ করবেন।
সংবর্ধনার শুরুতেই রফিকুল ইসলাম আধারকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান কবি সংঘ’র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এরপর তারা তার হাতে তুলে দেন শুভেচ্ছা উপহার। দীর্ঘ ৪ ঘন্টা স্থায়ী ওই অনুষ্ঠানে বসেই আধারকে উদ্দেশ্য করে কবিতা রচনা করে শোনান রাজিয়া সামাদ ডালিয়া, এডভোকেট মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান, এডভোকেট মোঃ সুরুজ্জামান ও কালাম বিন আব্দুর রশিদ। অনুষ্ঠানে কবি, সাংবাদিক, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ প্রায় ২ শতাধিক সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।