শেরপুরে আইনি সহায়তার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক ভুক্তভোগী পরিবার। ১৫ নভেম্বর সোমবার দুপুরে শহরের মাধবপুরস্থ শেরপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওই পরিবারের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো. আল আমিন খান।
আল আমিন লিখিত বক্তব্যে বলেন, তার আত্মীয় শেরপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য এ্যাডভোকেট শাহনুর রহমান রুবেলের সাথে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-১ আদালতে জমিসংক্রান্ত বিষয়ে একটি বাটোয়ারা মামলা চলমান রয়েছে। ওই মামলা চলমান থাকার পরও তিনি সম্প্রতি ওই জমি জবর দখলের চেষ্টা করেন। ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে আদালতে দণ্ডবিধির ৩২৩/৫০৬ ধারা মোতাবেক প্রসিকিউশন রিপোর্ট দাখিল হয়েছে। কিন্তু ওই ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে তিনি গত ৮ আগস্ট সিআর আমলী আদালতে তাকেসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪৪৭/৪৮৮/৩২৩/৩০৭/৩৭৯/৩৮০/৫০৬/(২)/১১৪ ধারা মোতাবেক একটি নালিশী মামলা দায়ের করলে তাদের প্রতি আদালতে হাজির হওয়ার সমন জারি হয়। ওই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে অন্তবর্তীকালীন জামিন লাভের পর জেলা আইনজীবী সমিতির কাছে আইনি সহায়তার জন্য আইনজীবী নিয়োগের আবেদন করেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, উভয়পক্ষের মামলা-মোকদ্দমার বিষয়ে আপোষ না করলে তাদের কোন সহযোগিতা করা হবে না বলে সমিতির তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়। ফলে আইনজীবী না পেয়ে সঠিক সময়ে হাজিরা দিতে না পারায় তাদের বিরুদ্ধে আদালত থেকে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হয়। এদিকে আইনজীবী না পাওয়ায় গত ২৭ অক্টোবর শেরপুরের সিআর আমলী আদালতে তিনিসহ ৫ জন আসামি স্বেচ্ছায় হাজির হয়ে নিজেরাই জামিন শুনানীর জন্য আবেদন করলে আদালত তাদের জামিন শুনানী করার অনুমতি প্রদান করেন। উভয়পক্ষের শুনানী শেষে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করলে আইনজীবীরা ওই আদালত বর্জন করেন। সেইসাথে অনির্দিষ্টকালের জন্য ওই আদালত বর্জনের ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে ৮ নভেম্বর তাদের জামিন বাতিলের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত থেকে নোটিশ জারি করা হয়। ওই অবস্থায় তারা আইনি সহায়তা পেতে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল মহলের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
অন্যদিকে সংবাদ সম্মেলনে তোলা অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে নালিশী মামলার বাদী এ্যাডভোকেট শাহনূর রহমান রুবেল বলেন, আসামিরা সামাজিক ও আইনি কাঠামোর কোন তোয়াক্কা করেন না। তারা আমার পারিবারিক, সামাজিক ও পেশাগত ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে।
এ ব্যাপারে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট মো. মোখলেছুর রহমান আকন্দ জানান, আইনজীবী চেয়ে তাদের দরখাস্ত আমাদের কাছে এখনও পৌঁছেনি। আবেদন পাওয়া গেলে অবশ্যই তাদের আইনজীবী দেওয়া হবে। এটা তাদের সাংবিধানিক অধিকার। তারা যে আইনজীবীই চাইবেন, প্রয়োজনে তাকেই দেওয়া হবে। আদালত বর্জনের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা সমিতির অভ্যন্তরিণ বিষয়। যখন আইনজীবী সমিতি বা কোন আইনজীবীর সাথে রূঢ় আচরণ বা সম্মান-মর্যাদাহানির মতো ঘটনা ঘটে, তখন আদালত বর্জন হয়। এটির সাথে ওই মামলার আদেশের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।