প্রতিপক্ষের হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত শেরপুর সদরের প্রত্যন্ত পল্লী হালগড়া গ্রামের ৩৫ পরিবারের নারী ও শিশুরা খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েনসহ র্যাবের টহল জোরদার করা হলেও কান্না ভুলে তারা একেবারেই নীরব পাথর হয়ে গেছে।
বসতবাড়ির মালামাল আগুনে পুড়ে ভস্মিভূত হওয়ার গন্ধ ছড়াচ্ছে এলাকাজুড়ে। ২৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার দুপুরে সরেজমিনে গেলে দেখা যায় ওই বিভৎস চিত্র। অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সহায়তায় তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য হুইপ আতিউর রহমান আতিক। দুপুরে তিনি ওই এলাকা পরিদর্শন করে বিবদমান পক্ষদ্বয়কে সহনশীল ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহবান জানান। সেই সাথে তিনি অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতি পরিবারকে ২ বান্ডিল ঢেউটিন ও নগদ ৬ হাজার করে টাকাসহ খাদ্য-বস্ত্র ও জ্বালানি সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দেন।
ওইসময় সদর এসিল্যান্ড মুকতাদিরুল আহমেদ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজিমুল হক নাজিম, প্রেসক্লাব সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মিজু, সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান সোহেল ও আওয়ামী লীগ নেতা শামসুল হকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ছানুয়ার হোসেন ছানু ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে ওইসব পরিবারের সদস্যদের সহায়তার আশ্বাস দেন।
জানা যায়, সদর উপজেলার হালগড়া গ্রামের একখন্ড জমি নিয়ে মজু মিয়া ও তার ভাই কাদেরের সাথে একই এলাকার রফিক মিয়া ও অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য রহিজ উদ্দিনের দ্বন্দ্ব চলছিল। বৃহস্পতিবার বিরোধপূর্ণ জমিতে উভয়পক্ষের লোকজন রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষে জড়িয়ে পড়লে ১০ জন আহত হয়। গুরুতর আহত কাদেরের ভাই আব্দুস সাত্তার শুক্রবার বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়। তার মৃত্যুর খবরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষ দেশীয় ধারালো অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে গ্রামের দু’দিকে অবস্থান নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ হালগড়া গ্রামে অবস্থান নেয়। ওইসময় রহিজউদ্দিন-রফিকদের ঘরবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে ৩৫টি বাড়ি ঘর ভস্মিভুত হয়।
অগ্নিকান্ডে ভস্মিভূত পরিবারগুলোর দাবি, পুলিশের উপস্থিতিতে মজু-কাদেরের লোকজন ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়ার সময় এক মহিলাকে পুলিশ ধরে ফেললে পুলিশের ওপর হামলা করে তাকে ছাড়িয়ে নেয় রহিজউদ্দিনের লোকজন।