‘শেখের বেটি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) মোক নয়া ঘর দেল বাহে। মোক দেকার কাইয়ো ছিল না। মোর নামটা ইউএনও নিয়ে গেউচে। সে জন্য মুই ঘরটা পালুং। আগত ঘরের চাল দিয়ে ঘরের ভিতরত পানি পরছে। কি কষ্টেত দিন কাটাচোং বাহে। খেতা বালিশ সগই ভিজি গেইচে। এ্যালা মুই নতুন ঘরত থাকোং। আল্লা তাক ভাল আকুক।’ আঞ্চলিক ভাষায় এভাবেই মনের ভাব প্রকাশ করলেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার পশ্চিম ধনিরাম গেটের বাজার গ্রামের বৃদ্ধা রেজিয়া বেওয়া।
শুধু রেজিয়া বেওয়া নয়, তারমতো অনেকেই এখন বেজায় খুশি নতুন ঘরে বসবাস করার সুযোগ পেয়ে। ফুলবাড়ী উপজেলায় ৩৭৬টি হতদরিদ্র ও অসহায় পরিবারের বাড়িতে নতুন ঘরসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এক সময় ১৫ বিঘা জমির মালিক ছিলেন রেজিয়ার স্বামী আবু কবিরাজ। তখন সুখেই কাটতো তাদের দিন। ধরলার ভাঙনে এখন বাড়ির ভিটার ৫ শতাংশ জমি ছাড়া কিছুই নেই তার। স্বামী মারা গেছেন ১০ বছর আগে। সংসার জীবনে ১ ছেলে ও ২ মেয়ের জন্ম হয়েছে। অভাবের কারণে একমাত্র ছেলে ভারতে গেছেন কাজের সন্ধানে। বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। এখন শুধু ছোট মেয়ে আনজু থাকেন বাড়িতে।
অভাবের কারণে অন্যের বাড়িতে কাজ করে খেয়ে না খেয়ে কোন রকমে জীবন কাটাতেন রেজিয়া বেওয়া। বৃষ্টি আসলেই পানি পড়ার কারণে ঘরে ঘুমাতে পারতেন না তিনি। তারমতো অসহায় মানুষগুলোকে এগিয়ে নেয়ার জন্য নতুন ঘরসহ টয়লেট নির্মাণ করে দিল উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সবুজ কুমার গুপ্ত জানান, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের অধীনে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৩৭৬ হতদরিদ্র পরিবারের বাড়ি নির্মাণে ৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছিল। উপজেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে কংক্রিটের সিঁড়ি, মেঝো প্লাস্টারসহ দুই ফিট ইটের কাজ, দরজা-জানালা ও টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে তাদের বাড়িতে।
উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা দেবেন্দ্র নাথ উরাঁও জানান, জমি আছে ঘর নাই এ প্রকল্পের অধীনে দ্বিতীয় দফায় ৩৭৬টি অসহায় পরিবারের বাড়িতে সরেজমিনে যাওয়া পর ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রত্যোকের বাড়িতে টিনসেড ঘর ও ল্যাট্রিন দেয়া হয়েছে। তারা এখন নতুন ঘরে উঠেছেন।
সূত্র: সমকাল।
(শে/টা/বা/শা)