শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের নেত্রী মধ্যরাতে ছাত্র হলের গেস্ট রুমে গিয়ে শাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজীবুর রহমানের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই নেত্রীর নাম সাবিহা সায়মন পুষ্প। তিনি শাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
বুধবার (৮ মে) শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজীবুর রহমানের জন্মদিন ছিল। জন্মদিন উপলক্ষে দিবসের শুরুতে রাত ১২টার দিকে ছাত্রলীগ নেত্রী সাবিহা সায়মন পুষ্প ছাত্রদের আবাসিক হল শাহ পরানের সামনে যান৷ পরে সেখান থেকে অন্যান্য নেতাকর্মীর সঙ্গে শাহ পরান হলের ভেতরে গেস্ট রুমে গিয়ে কেক কেটে সাধারণ সম্পাদকের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানান তিনি।
শাহ পরান হলের গেস্ট রুমে কেক কাটছেন এবং সাধারণ সম্পাদকের মুখে কেক তুলে দিচ্ছেন এমন কিছু ছবি ডিবিসি নিউজের হাতে এসেছে। শুভেচ্ছা জানানো শেষে সেখান থেকে তিনি ছাত্রী হলে ফিরে যান৷
ছাত্র হলে প্রবেশ করতে পারেন কি-না এই বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগ নেত্রী সাবিহা সায়মন পুষ্পকে মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে তিনি ফোনকল কেটে দেন। তবে এ বিষয়ে পুষ্প গণমাধ্যমে জানান, তিনি অপরিচিত কাউকে তার কোনো পারসোনাল তথ্য দিবেন না।
মধ্যরাতে ছাত্র হলে ছাত্রলীগ নেত্রীর প্রবেশ নিয়ে শাহ পরান হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক কৌশিক সাহার সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, আমরা এই বিষয়ে অবগত হয়েছি। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
ছাত্রলীগ নেত্রী সাবিহা সায়মন পুষ্প বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী ছাত্রী হলের সি-ব্লকের ৪০৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী।
লোকপ্রশাসন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, তিনি প্রায় এক বছর আগে তার একাডেমিক পড়াশোনা শেষ করেছেন। এরপরেও ছাত্রী হলে থেকে যাচ্ছেন তিনি। অথচ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে হল ছেড়ে দেওয়ার বিধান রয়েছে।
ছাত্র হলে ছাত্রলীগ নেত্রীর প্রবেশসহ সকল বিষয় নিয়ে শাবিপ্রবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী ডিবিসি নিউজকে বলেন, ‘ছাত্র হলে প্রবেশের বিষয়টা আমি বেশ পরে জেনেছি। এই বিষয়ে দুই হলের প্রভোস্টের সঙ্গে কথা বলেছি এবং সত্যতা পাওয়া গেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শিক্ষা কার্যক্রম শেষে হলে থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে প্রভোস্টের সঙ্গে কথা বলবো।’
এদিকে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজীবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে প্রায় চারশত মানুষের জন্য মোরগ পোলাওয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। ভোজে অল্প কিছু সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এছাড়াও জন্মদিন উপলক্ষে রক্তদান, বৃক্ষরোপণ, আনন্দমিছিল, কেক কাটা এবং মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এই সকল আয়োজনের অর্থের উৎস কী— এমন প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
#ডিবিসি নিউজ