গত কয়েকদিনে টক অব দ্যা কান্ট্রিতে রূপ নিয়েছে চিত্রনায়ক শাকিব খানের বিরুদ্ধে প্রযোজক রহমত উল্লাহর তোলা ধর্ষণ অভিযোগ। ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার শুটিংয়ে অস্ট্রেলিয়া গিয়ে অভিনেতা ধর্ষণ করেন এবং সেখানে গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন বলে দাবি করেন রহমত উল্লাহ। বিপরীতে শাকিব ওই প্রযোজককে ‘প্রতারক ও বাটপার’ বলে মন্তব্য করেন। এ নিয়ে রহমত উল্লাহ লিগ্যাল নোটিশ পাঠান এবং চিত্রনায়কও প্রতারণা ও হত্যার হুমকির অভিযোগ এনে মামলা করেন পাল্টা।
সবশেষ বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) শাকিব মামলা করে সাংবাদিকদের বলেন, এখন আমি বিজয়ের হাসি হাসছি। কারণ আমি আমার পরিবার ও সবাইকে এটা বোঝাতে পেরেছি যে, এসব একটা ফাঁদ ছিল। আমার ফ্যান-ফলোয়াররা এখন নিশ্চিন্তে কথা বলতে পারবেন।
এদিকে প্রযোজক রহমত উল্লাহর অভিযোগপত্রে যে নারীকে শাকিব ধর্ষণ করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই নারী এ ব্যাপারে কথা বলেছেন। দেশের একটি সংবাদমাধ্যমকে অস্ট্রেলিয়ান ওই নারী জানিয়েছেন, বাংলাদেশে তার প্রসঙ্গ টেনে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, সেসব কিছুই জানেন না তিনি।
‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার ব্যাপারে ওই নারী প্রযোজক বলেন, সিনেমাটি সম্পূর্ণ করা হবে কিনা, এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি আমরা। আমার ব্যক্তিগত বিষয়ে যেসব কথা হচ্ছে, এ জন্য কাউকে আমি অনুমতি দেইনি। এ নিয়ে যে পদক্ষেপ নেয়া হবে, সেটাও জানতাম না আমি।
২০১৬ সালে তোলা ধর্ষণের অভিযোগটি এখনো তদন্তাধীন। এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেবেন সেটি বিবেচনা করবে ভবিষ্যৎ। এখন এসব নিয়ে কোনো কিছু ভাবছেন না বলেও জানান অস্ট্রেলিয়ান ওই নারী।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ মার্চ বিকেলে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিচালক, শিল্পী সমিতি ও ক্যামেরাম্যান সমিতি বরাবর শাকিবের বিরুদ্ধে মিথ্যা আশ্বাস, অসদাচরণ ও ধর্ষণের মতো গুরুতর বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানান ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার প্রযোজক রহমত উল্লাহ।
নির্মিতব্য ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ (২০১৭) সিনেমায় অসদাচরণ, মিথ্যা আশ্বাস, ধর্ষণ (NSW Police reference no: E 62494959) এবং পেশাগত অবহেলার মাধ্যমে চলচ্চিত্রটির ক্ষতি সাধন, চলচ্চিত্রের শুটিং সম্পন্ন করতে অথবা লগ্নিকৃত অর্থ ফিরিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় নিরুপায় হয়ে অভিযোগ করেছেন বলে অভিযোগেপত্রে উল্লেখ করেছেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এ বাঙালি প্রযোজক।
এর ক’দিন পর শাকিব রাজধানীর গুলশান থানায় মামলা করতে যান রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে। সেখানে মামলা না নেয়ায় ফিরে আসেন তিনি। এরপর ডিবি কার্যালয়ে যান। সেখান থেকে বের হয়ে বলেন, রহমত উল্লাহ বাটপার-প্রতারক। তিনি শুধু আমার সঙ্গেই প্রতারণা করেননি। এদেশের মানুষের সঙ্গেও প্রতারণা করেছেন। আমাকে দেশের লাখো মানুষ ভালোবাসে, তাদের সঙ্গেও প্রতারণা করেছেন বলে জানান শাকিব।
এরপর গত ২২ মার্চ আইনজীবী ড. মো. তবারক হোসেন ভুঁইয়ার মাধ্যমে এ চিত্রনায়ককে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান রহমমত উল্লাহ। শাকিবের আপত্তিকর মন্তব্যের কারণে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়।
পরে ২৩ মার্চ বেলা সোয়া ১১টার দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চাঁদা দাবি ও হত্যার হুমকির অভিযোগ এনে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী প্রযোজক রহমত উল্লাহর নামে মামলা করেন অভিনেতা।