নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টানা দ্বিতীয় ম্যাচেও জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যানদের দারুণ দৃঢ়তার দিনের বোলারদের দায়িত্বশীলতায় শ্বাসরুদ্ধকর লড়াই শেষে ৪ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-০ এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।
আজ শুক্রবার টসে জিতে ব্যাট করতে এসে নির্ধারিত ওভারে ৫ পাঁচ উইকেট হারিয়ে ১৪১ রান তোলে বাংলাদেশ। জবাবে দারুণ লড়াই করে ১৩৭ রানে থামে সফরকারীরা। ব্যাট হাতে একাই লড়াই করে ক্যারিয়ার সেরা অপরাজিত ৬৭ রান করেন কিউই অধিনায়ক টম ল্যাথাম।
টাইগারদের দেওয়া মাঝারি লক্ষ্য তাড়া করতে এসে শুরুটা ভালো হয়নি কিউইদের। ১৬ রানের মাথায় ওপেনার রচীন রবিন্দ্রকে (১০) সাজঘরে ফেরান সাকিব। পরের ওভারে এসে টম ব্লান্ডেলকে কট বিহাইন্ড করেন শেখ মেহেদী। ১৮ রানে দুই ওপেনারকে হারানোর পর দলের হাল ধরেন অধিনায়ক টম ল্যাথাম ও উইল ইয়াং।
অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠে তাদের জুটি। ধীরে ধীরে থিতু হয়ে উঠেন তারা। ১১তম ওভারে তাদের ৪৩ রানের দুর্দান্ত এই জুটিতে আঘাত হানেন সাকিব। ইয়াংকে (২২) নিজের দ্বিতীয় শিকার বানিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। চারে আসা কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে ৮ রানের মাথায় ফেরান নাসুম আহমেদ।
১৬তম ওভারের তৃতীয় বলে হেনরি নিকোলসকে মুশফিকের তালুবন্দি করে ফেরান শেখ মেহেদী। তার দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে এই ব্যাটসম্যান করেন মাত্র ছয় রান। দলের একপাশে উইকেট পড়তে থাকলেও অন্য পাশ আগলে রেখে ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক তুলে নেন অধিনায়ক ল্যাথাম। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২০ রান। ব্যাট হাতে লড়াই করে গেলেন ল্যাথাম। শেষ পর্যন্ত শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে ৪ রানের জয় পায় বাংলাদেশ। নির্ধারিত ওভারে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ১৩৭ রান তোলে সফরকারীরা। ব্যাট হাতে অপরাজিত ৬৭ রানের ইনিংস খেলেন ল্যাথাম।
এর আগে, টসে জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। অধিনায়কের সিদ্ধান্ত যে কোনো রকম ভুল ছিল না তাই প্রমাণ দিলেন দুই ওপেনার নাঈম শেখ ও লিটন দাস। প্রথম ম্যাচে ব্যর্থ হওয়া দুই জনই গড়লেন দারুণ ওপেনিং জুটি। তাতেই দারুণ সূচনা পায় টাইগাররা।
অস্ট্রেলিয়া সিরিজে ওপিংয়ে জুটিতে আসে সর্বোচ্চ ৪২ রান, কিউইদের বিপক্ষে সেটাকে আরও একটু এগিয়ে রাখলো এই যুগল। ৫৯ রানের মাথায় লিটন ফিরলেন থামে এই জুটি। ২৯ বলে ৩৩ রান করে রাচীন রবীন্দ্রর শিকার হন তিনি। পরের বলে নতুন ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমকে ফেরান এই স্পিনার। সাকিবের পরিবর্তে তিনে আসেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু দিনটা ভালো ছিল না তার। রাচীন রবীন্দ্রের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ষষ্ঠবারের মতো রান না করেই ফিরতে হয়েছে এই ব্যাটসম্যানের।
পজিশনে রদবদল করে চারে আসেন সাকিব। কিন্তু তিনিও খুব একটা আশা জাগিয়ানি কিছু করতে পারেননি। কোল ম্যাকননিকের ওভারে দুই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে বল তুলে দেন লংঅফে। সেখানে থাকা অভিষিক্ত বেন সিয়ার্স দুই বারের চেষ্টায় বলটি তালুবন্দি করেন। ৭ বলে ১২ করে সাজঘরে ফেরেন সাকিব।
একপাশ আগলে রেখে ১৬তম ওভার পর্যন্ত দারুণ ব্যাট করে গেছেন নাঈম শেখ। ৩৯ বলে ৩৯ রান করে রবীন্দ্রর তৃতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। নাঈমের পরপর নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে আসা আফিফ হোসেন ধ্রুবকে ফেরান আজাজ প্যাটেল।
শেষের দিকে নুরুল হাসান সোহানকে নিয়ে ঝড়ো ব্যাটে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ১৪১ রান তোলে বাংলাদেশ। শেষ বলে সোহান আউট হওয়ার আগে ৯ বলে করেন ১৩ রান। অন্য পাশে থাকা টাইগার অধিনায়ক অপরাজিত থাকেন ৩৭ রানে।