অনেকেরই মত মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ। বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাওয়া বহুদূরে, রিয়াদের আর জাতীয় দলে ফেরাই হবে কঠিন।
কেউ কেউ এ মিডল অর্ডার কাম অফস্পিনারের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি ঘটিয়ে ফেলেছেন। কারও ধারণা রিয়াদের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি ঘটে গেছে। তার পক্ষে আর জাতীয় দলে ফেরা সম্ভব নয়।
আসলে কি তাই? নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্ট কি এমন কথা বলেছে? বিসিবির অন্যতম পরিচালক, বিসিবি গেম ডেভেলপমেন্ট কমিটি চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সুজন কিছুতেই মানতে নারাজ যে রিয়াদের ক্যারিয়ার শেষ।
বলে রাখা ভালো, বাংলাদেশের ক্রিকেটের খুটিনাটি খোঁজখবর যারা রাখেন, তারা জানেন রিয়াদের গুরু ও মেন্টর হচ্ছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। সেই বয়সভিত্তিক পর্যায় থেকেই খালেদ মাহমুদ সুজনের হাতে বেড়ে উঠে জাতীয় দলে জায়গা পেয়েছেন রিয়াদ।
কাজেই যে কোনো কোচের চেয়ে রিয়াদকে অনেক ভালো ও বেশি চেনেন সুজন। জাতীয় দলের এ সাবেক অধিনায়ক মনে করেন না, রিয়াদের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে।
আজ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে বিসিবি আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের এক পর্যায়ে রিয়াদ প্রসঙ্গে খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, ‘আমি এটা এখনই বলবো না যে ওর (রিয়াদ) শেষটা দেখে ফেলেছি।’
রিয়াদকে এখনো একজন লড়াকু ক্রিকেটার আখ্যা দিয়ে এ নামি ও সফল কোচ এই ক্রিকেটারকে ভেঙে না পড়ার পরামর্শ দিলেন। বলেন, ‘স্টিল রিয়াদ একজন গুড ফাইটার। আমি মনে করি টিম কম্বিনেশন বা যে কারণেই বাদ পড়ুক না কেন, তাতে ভেঙে পড়ার কিছু নেই। এটা সত্যি কথা রিয়াদের বয়সও হচ্ছে। আমি এখনো বিশ্বাস করি রিয়াদ যেভাবে ফাইট করে চেষ্টা করে, তাতে শেষ হয়ে গেছে বলাটা ঠিক হবে না। সুযোগ আবার আসতেও পারে।’
‘রিয়াদ এখনো বিসিবির চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার। সুতরাং আমার মনে হয় রিয়াদ এখনো সেই স্পোর্টসম্যান স্পিরিটটাই রাখবে। নিজের সাথে লড়াই করবে এবং নিজের সাথে লড়াই করাটাই সবচেয়ে বড় লড়াই হবে। আমার মনে হয় ইটস টু আর্লি টু সে রিয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ওয়ান্স ইউ আর এ ক্রিকেটার, ইউ আর এ ক্রিকেটার। রিয়াদ যতক্ষণ না পর্যন্ত বলছে ও শেষ করছে, ততক্ষণ পর্যন্ত পাইপলাইনে সে অবশ্যই থাকবে। রিয়াদ বাংলাদেশে খেলার মতো যোগ্যতা অবশ্যই রাখে।’
সুজন বোঝানোর চেষ্টা করেন, রিয়াদ তার নিজ যোগ্যতা বলেই জাতীয় দলে ফিরতে পারে। আর তাই মুখে একথা, ‘কেউ খারাপ খেলুক, রিয়াদ ওখানে জায়গা করে নিক আমি এটাও বলছি না। আবার এটাও বলতে পারি না কেউ ইনজুরি আক্রান্ত হোক আর রিয়াদ ওখানে খেলুক। রিয়াদের যদি যোগ্যতা থাকে সে অবশ্যই সুযোগ করে নেবে।’
শুধু বিশ্বকাপেই রিয়াদের শেষ এটাও চান না সুজন। তিনি বলেন, ‘তবে আমি এটা বলতে চাই, বিশ্বকাপটাই রিয়াদের শেষ কেন। বিশ্বকাপ তো অক্টোবরে শেষ। এরপর তো অনেক ক্রিকেট আছে। রিয়াদ যদি ইয়ো ইয়ো টেস্টে ১৭.৬ পায়, তাহলে তো ও নিজেকে তৈরি করে আরও এক বছর চেষ্টা করতে পারে। কোনো একটা বিশ্বকাপ আসুক, সেটা ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি জাতীয় দলে কোনো ক্রিকেটার সুযোগ না পেলে আপনারা বলেন শেষ হয়ে গেলো।’
রিয়াদের বাদ পড়াটাকে ইস্যু বানানোর দরকার নাই বলেও মন্তব্য করেন সুজন। তিনি বলেন, ‘রিয়াদ তো আর অন্য কিছু করে না, এটাই তার পেশা। আমার মনে হয় ও ঘরোয়া ক্রিকেট খেলবে। আমার ক্যারিয়ারে আমি দশবার বাদ পড়েছি, দশবার ঢুকে গেছি। এটা ইস্যু বানানোর কিছু নাই। রিয়াদ গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার। সুযোগ পায়নি। যে পেয়েছে, সে হয়তো এই মুহূর্তে কাজে লাগবে।’
তবে সুজন মানছেন অভিজ্ঞতাকে মানদণ্ড ধরলে এখনো মিডল অর্ডারে রিযাদ অতুলনীয়। আর তাইতো মুখে এমন কথা, ‘হ্যাঁ, রিয়াদের অভিজ্ঞতা যেটা আমাদের বর্তমান মিডল অর্ডারে কারও কাছে নেই। আমি মনে করি, অভিজ্ঞতা সবসময় বিবেচনা করা হয়।’