বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর রাত আটটার মধ্যে রাজধানীর দোকানপাট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রোববার (১৯ জুন) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে সব দোকানপাট নয়, কিছু কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আটটার পরও খোলা রাখা যাবে বলে জানানো হয়েছে।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা একথা জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১১৪ এর উপধারা ৩ এ বলা হয়েছে ‘কোন দোকান, কোন দিন রাত্রি আট ঘটিকার পর খোলা রাখা যাইবে না। তবে শর্ত থাকে যে, কোন গ্রাহক যদি উক্ত সময়ে কেনা-কাটার জন্য দোকানে থাকেন তাহা হইলে উক্ত সময়ের অব্যবহতি আধাঘন্টা পর পর্যন্ত উক্ত গ্রাহককে কেনা কাটার সুযোগ দেওয়া যাইবে’।
এছাড়াও বলা হয়েছে, ১১৪ এর উপধারা (১)এ বলা হয়েছে প্রত্যেক দোকান বা বাণিজ্য বা শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রতি সপ্তাহে অন্ততঃ দেড় দিন সম্পূর্ণ বন্ধ থাকিবে। (২) কোন এলাকায় উক্তরূপ কোন প্রতিষ্ঠান কোন্ দেড় দিন সম্পূর্ণ বন্ধ থাকিবে তাহা প্রধান পরিদর্শক স্থির করিয়া দিবেনঃ তবে শর্ত থাকে যে, প্রধান পরিদর্শক সময় সময় জনস্বার্থে উক্তরূপ নির্ধারিত দিন কোন এলাকার জন্য পুনঃ নির্ধারিত করিতে পারিবেন।
যেসব প্রতিষ্ঠান ও দোকান খোলা রাখা যাবে
রাত আটটার পরও খোলা রাখা যাবে যেসব প্রতিষ্ঠান সেগুলো হলো- ডক, জেটি, স্টেশন অথবা বিমান বন্দর এবং পরিবহন সার্ভিস টার্মিনাল অফিস, প্রধানত তরি-তরকারি, মাংস, মাছ, দুগ্ধ জাতীয় সামগ্রী, রুটি, পেষ্ট্রি, মিষ্টি এবং ফুল বিক্রির দোকান, ঔষধ, অপারেশন সরঞ্জাম, ব্যান্ডেজ অথবা চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান, দাফন ও অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রির দোকান, তামাক, সিগারেট, পান-বিড়ি, বরফ, খবরের কাগজ, সাময়িকী বিক্রির দোকান এবং দোকানে বসে খাওয়ার জন্য নাশতা বিক্রির খুচরা দোকান, খুচরা পেট্রোল বিক্রির জন্য পেট্রোল পাম্প এবং মেরামত কারখানা নয় এমন মোটর গাড়ির সার্ভিস স্টেশন, নাপিত এবং কেশ প্রসাধনীর দোকান, যেকোনো ময়লা নিষ্কাশন অথবা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, যেকোনো শিল্প, ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান যা জনগণকে শক্তি, আলো-অথবা পানি সরবরাহ করে। এছাড়াও ক্লাব, হোটেল, রেস্তোরাঁ, খাবার দোকান, সিনেমা অথবা থিয়েটার।
এসময় শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান বলেন, সার্বিক বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয় করার জন্য সরকার বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ১১৪ কঠোরভাবে প্রতিপালনের উদ্যোগ নিয়েছে। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি, এফবিসিসিআইসহ সকল ব্যবসায়ী সংগঠন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার প্রতি সম্মান জানিয়ে সরকারের এ উদ্যোগ সর্বসম্মত মেনে নিয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দোকান মালিক সমিতি আগামী ১ জুলাই থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলার রাখার অনুমতির চান। প্রতিমন্ত্রী বলেন, তাদের অনুরোধ বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হবে।
সভায় শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহছানে এলাহী, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মহ. শের আলী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নুসরাত জাবীন বানু, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাসুদ করিম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের মহাপরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ, এফবিসিসিআই এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. নূর কুতুব আলম মান্নানসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশন, দফতর- সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।