বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন হয়ে গেছে সাকিবময়। বিশ্বকাপের আগে সাকিব নিজেকে ভেঙে গড়েছেন নতুন করে। ওজন কমিয়ে হয়েছেন ঝরঝরে। তার সবকিছুর প্রতিফলন ঘটে মাঠের লড়াইয়ে।
এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের একমাত্র জয় পাওয়া ম্যাচের নায়কও সাকিব। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং সব বিভাগেই রাখছেন কৃতিত্বের স্বাক্ষর। গতকাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজের চতুর্থ বিশ্বকাপে এসে পেয়েছেন প্রথম সেঞ্চুরির দেখা। এর আগের দুই ম্যাচে করেছিলেন হাফ সেঞ্চুরি।
বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে হয়েছিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। প্রতিটা ম্যাচেই দেখা গেছে সাকিবের অলরাউন্ডিং পারফর্মেন্স। সাকিবের ব্যাপারে একটা কথা অনেকেই বলে থাকেন, বোলিংয়ে না পারলে ব্যাটিং দিয়ে পুষিয়ে দেবেন তিনি, আবার উল্টোটা হতে পারে।
এবারের বিশ্বকাপে সাকিব রান সংগ্রাহকের তালিকায় সবার শীর্ষে। এতেই বোঝা যায় তার ব্যাটিংটা কেমন হচ্ছে। সাকিব ব্যাটিং করতে নামেন তিন নম্বর পজিশনে। আগে নামতেন পাঁচ কিংবা ছয়ে। কিন্তু এই পজিশন পেতে অনেক কাঠখড়ও পোড়াতে হয়েছে তাকে।
বলছেন সাকিব নিজেই। গতকাল ম্যাচ শেষে ব্যাটিং পজিশন নিয়ে সাকিব আল হাসান বলেন, ‘সবাইকেই বোঝাতে হয়েছে। হ্যাঁ, সবাইকেই। কারণ যদি এক ম্যাচে রান না পাই তাহলে তারা ভাববে, তার তো পাঁচেই ব্যাট করা উচিত। অনেক লোককে বুঝিয়ে আমাকে তিনে ব্যাট করতে হয়েছে। এখন এটা বেশ কাজে দিচ্ছে।’
চতুর্থ বিশ্বকাপে এসে সাকিব নিজেকে নিয়ে গেছেন গ্রেট ক্রিকেটারদের কাঁতারে। শ্রীলঙ্কার সনাৎ জয়সুরিয়া, অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ ওয়াহদের পাশে এখন জ্বলজ্বল করছে সাকিবের নামও। হয়তো এই বিশ্বকাপে বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার ছাড়িয়ে যাবেন এই গ্রেটদেরও।
বিশ্বকাপে ২৪ ম্যাচে সাকিব ব্যাটিংয়ে ৮০০ রান করেছেন। হাফ সেঞ্চুরি সাতটি ও সেঞ্চুরি একটি। বোলিংয়ে নিয়েছেন ২৬ উইকেট। এই পরিসংখ্যানই সাকিবকে নিয়ে গেছে স্টিভ ওয়াহ-জয়সুরিয়াদের পাশে।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে ৫০০ রান ও ২৫ উইকেট নিয়েছেন এমন তালিকায় সবার ওপরে আছেন সনাৎ জয়সুরিয়া। জয়সুরিয়া ৩৮ ম্যাচে ১১৬৫ রান, ২৭ উইকেট। দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন স্টিভ ওয়াহ। তিনি ৩৩ ম্যাচে ৯৭৮ রান, ২৭ উইকেট নিয়েছেন।
সাকিব বিশ্বকাপে আরও চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, ‘আপনাকে নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে হবে এখানে। আমি অবশ্য উপভোগ করছি এই মুহূর্তে। কিন্তু বলে রাখা দরকার, এটা কেবলই শুরু। আমাকে দলের জন্য ব্যাটে-বলে আরও অবদান রাখতে হবে। এই টুর্নামেন্টে আরও ম্যাচ আছে। দেখা যাক।’