ময়মনসিংহে পৃথক তিনটি সড়ক দুর্ঘটনায় নয়জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে আজ শনিবার দুপুরে ত্রিশালে ট্রাক ও বাসের ধাক্কায় সাতজন, ভালুকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় একজন এবং শুক্রবার রাতে তারাকান্দায় অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন।
ত্রিশাল থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশাল উপজেলার চেলেরঘাট নামক স্থানে যাত্রীবাহী একটি বাস রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি পাথরভর্তি ড্রাম ট্রাককে ওভারটেক করার চেষ্টা করে। এতে বাসের পেছনের অংশ ট্রাকের সঙ্গে সজোরে আঘাত লেগে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে পাঁচজন নিহত হন। আহত হন আরও ১০ জন। আহত ব্যক্তিদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুজন মারা যান।
নিহত ব্যক্তিদের পাঁচজন একই পরিবারের সদস্য। তাঁরা ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার ছনধরা ইউনিয়নের মড়লবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ফজলুল হক (৩৫), তাঁর স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২৮), তাঁদের ছেলে আব্দুল্লাহ (৬) ও মেয়ে আজমিনা (৯) এবং ফজলুল হকের শ্বশুর নজরুল ইসলাম (৫৫)। নিহত অপর একজনের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
ত্রিশাল থানার ওসি মাঈন উদ্দীন জানান, ঢাকা থেকে শেরপুরের ঝিনাইগাতীগামী এম এ রহিম পরিবহনের (ময়মনসিংহ-ব-১১-০১৪৮) একটি বাস ত্রিশালের চেলেরঘাট এলাকায় একটি বালুবাহী ট্রাককে ওভারটেক করতে গিয়ে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে পাঁচজনের মৃত্যু হয়।
এদিকে ভালুকায় গাড়িচাপায় সোহরাব হোসেন নামে এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উপজেলার জামিরদিয়া তেপান্তর হোটেলের সামনে একটি মোটরসাইকেলকে পেছন থেকে চাপা দেয় একটি গাড়ি। এতে মোটরসাইকেল চালক সোহরাব হোসেন গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। অবস্থার অবনতি ঘটলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত সোহরাব উপজেলার বিরুনীয়া গ্রামের মৃত ইসমাইল হোসেনের ছেলে।
অন্যদিকে ধোবাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনায় আব্দুস সাত্তার নামে এক রোগী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় চালকসহ আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন।
গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স রোগী নিয়ে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে তারাকান্দার হরিয়াগাই এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হয়। অ্যাম্বুলেন্সটি রাস্তার পাশে গাছে ধাক্কা দিলে চালক ও রোগীসহ ছয়জন আহত হন। পরে আহতাবস্থায় তাঁদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হলে মধ্যরাতে আব্দুস সাত্তার মারা যান। আহত ব্যক্তিরা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নিহত আব্দুস সাত্তার উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের কালিকাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকার রামসিংহপুর গ্রামের বাসিন্দা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ধোবাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু হাসান শাহিন বলেন, ‘বিষয়টি দুঃখজনক। আহতরা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অ্যাম্বুলেন্সটিও উদ্ধার করা হয়েছে।’
#আজকের পত্রিকা