শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বারমারী এলাকার আন্ধারুপাড়া গ্রামের মৃত- আব্দুস সামাদের বড় ছেলে হাসেম আলী (৪০) গতকাল সোমবার (১৭ আগস্ট) রাত সাড়ে আটটার দিকে স্টোক করে ইন্তেকাল করেছেন। তার চাচা সুলতান মিয়া জানান, হাসেম আলী গতকাল রাতে স্থানীয় বারমারী বাজার থেকে তার মায়ের জন্য পান কিনতে যায়। বাজারে গিয়ে হঠাৎ করে স্টোক করে পড়ে গিয়ে তার দুটি দাত ভেঙ্গে যায় ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতপ্রাপ্ত হন। এসময় তার নাক ও মুখ দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। পরে প্রত্যক্ষদর্শীরা তাকে উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা সাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। সে আর তার মায়ের জন্য পান কিনে নিজ ঘরে ফিরতে পারেনি। মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে দশটায় পারিবারিক কবরস্থানে হাসেম আলীকে দাফন করা হয়। কিন্তু তার দাফন ও জানাযায় অংশ গ্রহন করতে আসা মর্মান্তিক সড়ক র্দুঘটনায় ৮ জন আত্মীয়ের নিহত হওয়ার খবরটি মেনে নিতে পারছেন না হাসেম আলীর পরিবার ও এলাকাবাসী।
এদিকে, হাসেম আলীর মৃত্যুর খবর মুঠোফোনে জানানো হয় ময়মনসিংহের গফরগাঁও এবং ভালুকা উপজেলায় থাকা তার স্বজনদের। তার স্বজনেরা খবর পেয়ে আজ মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) ভোররাতে ভালুকা থেকে হাসেম আলীর খালু, খালা ও অন্যান্য আত্মীয়রা হাসেম আলীকে দাফন করার জন্য শেরপুরের নালিতাবাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা দেন। কিন্তু পথিমধ্যে ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলার ভাইটকান্দি এলাকায় পৌঁছলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইক্রোবাসটি পাশের পুকুরে পড়ে গেলে ঘটনাস্থলেই হাসেমের ৮ জন স্বজন মারা যান। এই খবরে থমকে যায় হাসেমের পরিবার ও এলাকাবাসী।
প্রতিবেশী বিল্লাল হোসেন ও গিয়াস উদ্দিন জানান, হাসেম আলীর একমাত্র কণ্যা সন্তান রয়েছে। আর তার মা ছিল সংসারের সদস্য। তার বাবা আব্দুস সামাদ গত বছর এই সময়েই ইহকাল ত্যাগ করেনে। ছোট ভাইটিও আত্মহত্যা করেছে কয়েক বছর আগে। চার বোনকে বিয়ে দিয়েছেন। হাসেম আলীও বিদায় নিলেন। এখন এই পরিবারের বংশের প্রদীপ জ্বালানোর আর কেই রইলো না। তারা আরো বলেন, হাসেম আলীর স্বজনরা মর্মান্তিক সড়ক র্দুঘটনায় যে নিহত হয়েছেন এই খবর এখনো তার মাকে জানানো হয়নি। কেননা একদিকে পুত্র শোক আপরদিকে স্বজন হারানোর ব্যাথা তিনি সইতে পারবেন না। কেননা হাসেম আলীর পরিবারে চলছে শোকের মাতম। এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছাঁয়া।