এবারের কোরবানি ঈদে একটি ছাগলকাণ্ডে দেশজুড়ে আলোচনায় আসেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা মতিউর রহমান। কেঁচো খুড়তে গিয়ে যেন বেরিয়ে আসে সাপ। সন্ধান মিলে তার বিপুল পরিমাণ সম্পদের। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর তাকে সরানো হয়েছে এনবিআর থেকে। তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনও। তবে এর মধ্যেই তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। যদিও ইতোমধ্যে আদালত সপরিবারে তাকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
গুঞ্জন উঠেছে, নিজের পরিচয় আড়াল করে গতকাল রোববার (২৩ জুন) বিকেলে মাথা ন্যাড়া করে আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে পাশের দেশ ভারতে চলে গেছেন আলোচিত-সমালোচিত মতিউর রহমান।
তবে মতিউর রহমানের দেশ ছাড়ার ব্যাপারে এনবিআরের একটি সূত্র জানালেও সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কিছু বলা হয়নি। দায়িত্বশীল কেউই এ ব্যাপারে মুখ খুলছেন না।
এদিকে সোমবার (২৪ জুন) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামস জগলুল হোসেনের আদালত মতিউর রহমান, তার স্ত্রী নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ ও ছেলে আহম্মেদ তৌফিকুর রহমান অর্নবের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। যদিও তার স্ত্রী-পুত্র আগেই দেশ ছেড়েছেন বলে খবর বেরিয়েছে।
রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট ড. মো. মতিউর রহমানকে তার পদ থেকে সরিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি সোনালী ব্যাংক থেকেও অপসারণ করা হয়েছে তাকে। তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বিজ্ঞাপন
গত ঈদুল আজহার আগে মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাতের ১৫ লাখ টাকায় কোরবানির ছাগল, ৭০ লাখ টাকায় কয়েকটি গরু কেনার ছবি ও খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে তিনি দাবি করেন, ইফাত তার ছেলে নয়। যদিও অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে, ইফাত তার দ্বিতীয় স্ত্রীর একমাত্র সন্তান।
এই প্রতারণার তথ্য সামনে আসার পর কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে যেন সাপ বেরিয়ে আসে। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার অবৈধ সম্পদের ফিরিস্তি উঠে আসে একের পর এক।