ফাঁকা বাড়িতে চুলায় রান্না করছিলেন মা। কোনো ভাবে আগুন ধরে যায় মায়ের গায়ের চাদরে। তখনই ঘরে ফেরে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছেলে। ওই সময় মাকে বাঁচাতে যায় সে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।
শনিবার সন্ধ্যায় ভারতের কাটোয়ার লোহাপোতার ওই ঘটনায় মা, ছেলে দু’জনকেই আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তবে রবিবার সকালে মারা যান আজিবা বিবি (৪২)।
আহত শরিফুল শেখকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দু’হাত গুরুতর জখম হয়েছে পাঁচপাড়া হাই মাদ্রাসার ওই ছাত্রের। সহায়কের মাধ্যমে তার পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করার আবেদন জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই দিন সন্ধ্যায় সিঙ্গি পঞ্চায়েতের লোহাপোতায় নিজের বাড়িতেই অসাবধানে কাজ করতে গিয়ে চাদরে আগুন ধরে যায় আজিবা বিবির। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাড়ি ফেরে তার ছোট ছেলে শরিফুল।
মঙ্গলবার থেকে শুরু হতে যাওয়া পরীক্ষার আগে বন্ধুর বাড়িতে পড়তে গিয়েছিল সে। জানা গেছে, মাকে পুড়তে দেখে বোনের ওড়না দিয়ে মাকে ঢাকতে যায় সে। তখনই আগুনে দুই হাত ঝলসে যায় শরিফুলের। পরে পড়শিরা দু’জনকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করান।
সোমবার হাসপাতালে শুয়ে শরিফুল বলেন, অনেক চেষ্টা করেও মাকে বাঁচাতে পারলাম না। পরীক্ষাও দিতে পারব কিনা জানি না। মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, বরাবরই মেধাবী ছাত্র শরিফুল। পড়াশোনার পাশাপাশি অ্যাথলেটিক্সেও প্রতি বছর জেলাস্তরে যোগ দেয় সে। শরিফুলের বাবা খেতমজুর মিসকিং শেখ বলেন, অনেক কষ্টে ছেলেকে পড়াচ্ছিলাম। ওর পড়া যাতে বন্ধ না হয় স্কুলে সেই আবেদন জানাব।
হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক শেখ আসিকুর রহমান বলেন, মঙ্গলকোট হাইমাদ্রাসায় ওই পরীক্ষার সিট পড়েছে। মাদ্রাসা বোর্ডে বিষয়টি জানিয়েছি। সহায়কের মাধ্যমে যেন সে পরীক্ষা দিতে পারে সেই ব্যবস্থা করব।
সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন