যাত্রীবেশে নির্ধারিত গন্তব্যের কথা বলে ভাড়া করা হয় সাদা মাইক্রোবাস। মাইক্রোবাসটি কিছু দূর যাওয়ার পরই অস্ত্রের মুখে চালক ও গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কাছে নিয়ে নেন। তারপর পথে পথে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের তোলা হয় মাইক্রোবাসে। গাড়িতে তোলার পর তাদের হাত-পা বেঁধে জিম্মি করে সঙ্গে থাকা যাবতীয় জিনিস নিয়ে কিছু দূর যাওয়ার পর রাস্তার পাশে ফেলে দেওয়া হয়। এভাবে পথে পথে যাত্রীদের সর্বস্ব লুট করে অবশেষে পুলিশের চেকপোস্টে এসে ধরা পড়েছেন তিনজন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কালিহাতীর মফিজুল ইসলাম মফিজ (৩০), মোহাম্মদ আল মামুন সাগর (৩০) ও মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম (২৮)। তাদের মধ্যে সাগরের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে। চক্রটির অন্যতম সদস্য মফিজুল ইসলাম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।
বুধবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানায় সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মো. শামীম হোসেন।
তিনি জানান, গত ৪ নভেম্বর ভোরে নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ মোড়ে পুলিশের চেকপোস্টে গাড়ির ভেতর থেকে চিৎকার শুনে তিনজনকে উদ্ধার করে পুলিশ। আটক করা হয় মফিজ নামে চক্রের সদস্যকে। এ সময় বাকিরা পালিয়ে যান। অপহরণের শিকার অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য রফিক পুলিশ দেখে চিৎকার দেওয়ায় ধরা পড়ে তিনজন। ওই সময় পুলিশ রফিক ছাড়াও আল আমিন ও বুলবুল নামে আরও দুজনকে উদ্ধার করে। তারা মাইক্রোবাসটির চালক ও সহকারী।
গত ৩ নভেম্বর সিরাজগঞ্জ থেকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর যাওয়ার কথা বলে মাইক্রোবাসটি ভাড়া করা হয় বলে জানিয়েছেন চালক আল আমিন। কিন্তু এক কিলোমিটার দূরে যেতেই দেশীয় অস্ত্র দেখিয়ে হাত, পা ও মুখ বেঁধে তাকে গাড়ির পেছনের সিটে ফেলে রাস্তায় চলতে থাকে তারা। তারপর রাস্তা থেকে বিভিন্ন যাত্রীদের তুলে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে রাস্তায় ফেলে চলে যায়। এ ঘটনায় মাইক্রোবাসের চালক বাদী হয়ে ৩ নভেম্বর থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামীম হোসেন বলেন, চক্রটি ২০১৪ সাল থেকে সড়ক-মহাসড়কে তাদের অপতৎপরতা চালাচ্ছিল। বেশ কিছু দিন ধরে এ ধরনের তৎপরতার তথ্য পাচ্ছিল পুলিশ। সে কারণে পুলিশের চেকপোস্টে মাইক্রোবাসে তল্লাশি করা হয়। চক্রটির সঙ্গে আরও যারা জড়িত তাদের শনাক্ত করার কাজ চলছে। রাতে এসব ছোট যানবাহনে চলাচল না করে বাসে চলাচল করার পরামর্শ দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ, পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।