শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র মধুটিলা ইকোপার্কে বন্য হাতির দল তান্ডব চালিয়ে মহুয়া রেষ্ট হাউজ, মিনি চিড়িয়াখানার বাউন্ডারি বেড়া ও গোলাপ বাগানের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। শনিবার (৩ জুন) গভীর রাতে ওই তান্ডব চালায়। বন্যহাতি সীমান্ত এলাকায় দফায় দফায় তান্ডব চালিয়ে জানমালের ক্ষতি সাধন করায় গ্রামবাসীর মাঝে আতংক বাড়ছে। তারা এর স্থায়ী সমাধান দাবী করেন।
সুত্র জানায়, নালিতাবাড়ী সীমান্তের গাড়ো পাহাড়ি এলাকায় প্রায় দুই যুগ ধরে বন্যহাতির দল তান্ডব চালিয়ে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি করে আসছে। গত এক সপ্তাহে কয়েক দফায় তান্ডব চালিয়ে মধুটিলা ইকোপার্ক ও আশপাশের এলাকার মানুষের ঘরবাড়ি ও মৎস খামারের ক্ষতি করেছে। এলাকার সাধারণ মানুষ হাতি তাড়াতে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। গ্রামবাসী জানান বন্যহাতির অত্যাচার বন্ধে স্থায়ী পদক্ষেপ না নেওয়ায় এটি এখন অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো কৃত্রিম দুর্যোগ হিসেবে দেখা দিয়েছে। বর্তমানে কৃষকেরা বোরো ধান কেটে ঘরে তুলার পর খাদ্যের সন্ধানে হাতির দল হানা দিচ্ছে ঘরবাড়ি ও কাঠাঁল বাগানে। একইসঙ্গে চলমান তাপ প্রবাহের তীব্র গরমে পানি পান করা ও গোসল করতে হাতিগুলো নেমে পড়ছে মৎস্য খামারে। এতে গ্রামবাসীরা প্রতিরোধ গড়ে তুলেও তাদের জানমাল রক্ষা করতে পারছে না।
এদিকে, মধুটিলা ইকোপার্কে সীমানা প্রাচীর না থাকায় শনিবার রাতে ৪০/৫০ টি বন্যহাতি পার্কের ভিতরে ঢুকে পড়ে। পার্কের ভিতরে মিনি চিড়িয়াখানার বাউন্ডারি বেড়া ও গোলাপ বাগান ক্ষতিগ্রস্ত করে। পরে সেখান থেকে তাড়া খেয়ে চলে যায় মহুয়া রেষ্ট হাউজে। সেখানে গিয়ে রান্না ঘরের দরজা জানালা ভেঙে তছনছ করে। এসময় রেষ্ট হাউজে রাত্রী যাপন করা কেয়ার টেকার বাদশা মিয়া হাতির ভয়ে চিৎকার চেচামেচি করলে পাশের গ্রামের শতাধিক মানুষ মশাল জ্বালিয়ে সেখানে গিয়ে হৈ-হুল্লোড় করে বাদশাকে উদ্ধার করেন।
বুরুঙ্গা কালাপানি গ্রামের কৃষক ও মৎস খামারি উসমান আলী জানান, হাতির দল আমার মৎস খামারে তান্ডব চালিয়ে প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা ক্ষতি করেছে। দীর্ঘদিন যাবত এমন তান্ডব চালালেও এর কোন স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না। আমরা এর স্থায়ী সমাধান চাই।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, বন্য হাতির দল শনিবার রাতে তান্ডব চালিয়ে পার্কের মহুয়া রেষ্ট হাউজ, গোলাপ বাগান ও মিনি চিড়িয়াখানার বাউন্ডারি বেড়া ক্ষতি গ্রস্ত করেছে। পরে আমরা হাতির পালকে নিরাপদে তাড়িয়ে দিয়েছি। পার্কের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি বিভাগীয় বন কর্মকর্তাদের অবগত করেছি। এছাড়া স্থানীয় অধিবাসীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলামান রয়েছে।