কাঠমান্ডুতে ইউএস বাংলার বিমান দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত শাহরিন আহমেদ যন্ত্রণা আর ভয়ঙ্কর স্মৃতি নিয়ে দেশে ফিরেছেন।
সিভিল এভিয়েশনের একজন নিরাপত্তা কর্মী জানান, বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) বিকাল ৩টা ৪৮ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি০০৭২ ফ্লাইটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান শাহরিন। সেখান থেকে বিকাল সোয়া ৪টার দিকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নেয়া হয়।
ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, শাহরিনকে বার্ন ইউনিটে নিয়ে আসা হয়েছে। তাকে চিকিৎসা দেয়ার জন্য আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে। এর আগে কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি অ্যান্ড বার্ন ইউনিট-৩ এ শাহরিনকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তার পা ভেঙে গেছে এবং শরীরের ৮ থেকে ১০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
এছাড়াও ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় আহত অপর তিনজনকে শুক্রবার (১৬ মার্চ) দেশে আনা হবে বলে জানিয়েছেন কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস। বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও জানান, কাল যারা আসবেন তারা হলেন- মেহেদি হাসান মাসুম, তার স্ত্রী সৈয়দা কামরুন নাহার স্বর্ণা এবং নিহত আলোকচিত্রী এফএই প্রিয়কের স্ত্রী আলমুন নাহার অ্যানী।
এছাড়াও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নেপালি চিকিৎসকরা ১০ বাংলাদেশির মধ্যে ছয়জনকে ছাড়পত্র দিয়েছেন। দুজনকে এখনও আইসিইউতে রাখা হয়েছে। একজনকে আছেন বার্ন ইউনিটে। আরেকজনের ছাড়পত্র এখনও মেলেনি।
বুধবার কাঠমান্ডুর ওম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডা. মো. রেজওয়ানুল হককে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। নরভিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইয়াকুব আলী ও কাঠমাণ্ডু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক এমরানা কবির হাসিকে দিল্লিতে পাঠানো হবে। যদিও ইয়াকুবকে চিকিৎসকরা ছাড়পত্র দিয়েছেন। তবে ফুসফুসসহ ৩৫-৪০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া হাসির অবস্থা সংকটাপন্ন।
প্রসঙ্গত, কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্থানীয় সময় সোমবার বেলা ২টা ১৮ মিনিটে অবতরণের সময় দুর্ঘটনার শিকার হয় ইউএস-বাংলার বোম্বার্ডিয়ার ড্যাশ ৮ কিউ৪০০ মডেলের এস২-এজিইউ বিমান। বিমানটি রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে এবং তাতে আগুন ধরে যায়। এ ঘটনায় বিমানে আরোহীর মধ্যে ২৫ বাংলাদেশিসহ ৫১ জন নিহত হয়েছে। ২০ জনকে আহত অবস্থায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ১০ বাংলাদেশিকে কাঠমান্ডুর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।