ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় দুই কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার কাজের অনিয়মের অভিযোগ।
উপজেলার উথুরা বাজার থেকে উত্তর দিকে মরানদী পর্যন্ত ১০ ফিট প্রসস্তের সড়টির দুই পাশে দুইফিট করে বর্ধিতকরণসহ পূর্ণনিমার্ণ করা হচ্ছে। অনিয়মের ব্যাপারে বার বার প্রতিবাদ করা সত্যেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
ভালুকা উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধিনে ঘর্ণিঝড় আম্পান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক অবকাঠামো পুনবার্ন শীর্ষক প্রকল্পের (সিএএফডিআরআইআরপি) আওতায় ২ কোটি ৩৬ লাখ ২৩ হাজার ১১৭ টাকা ব্যয়ে ভালুকা টু ঘাটাইল সড়কে উপজেলার উথুরা বাজার থেকে তিন কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজের দরপত্র আহবান করা হয়। কাজটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এলআর কন্সট্রাকশন দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম থেকেই অনিম শুরু করেন। ১০ ফুটের রাস্তাটির দুই পাশে দুই ফিট করে চারফিট প্রসস্তকরণে প্রায় দুই ফিট উচ্চতায় সাববেস কাজে নিন্মমানের খোয়ার সাথে সামান্য বালি ও মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে। যদিও ৫০ ভাগ বালির সাথে ৫০ ভাগ খোয়া মেশানো কথা। কিন্তু কোনো কোনো স্থানে দুই ফিট তো দুরের কথা দুই ইঞ্চিও বালি ও খোয়া দেয়া হচ্ছে না। মাটি দিয়ে দ্রুতগতিতে কাজ করে যাচ্ছে বলে এলাকাবাসি অভিযোগ করেন।
সরেজমিনে গেলে এলাকার প্রায় শতাধিক লোক জড়ো হয়ে অভিযোগ করে বলেন, তারা মজবুদ সড়ক চান। নিন্মমানের খোয়া ও বালু বিহিন মাটি দিয়ে যেভাবে দায়সারা কাজ করা হচ্ছে ছয় মাসও রাস্তাটি টিকবে না। এ ব্যাপারে বার বার প্রতিবাদ করা হলেও শ্রমিকরা তাদের কথার তোয়াক্কা করছেনা। তবে এ সময় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কোনো কর্মকতার্ বা কর্মচারীকে রাস্তার তদারকি কাজে পাওয়া যায়নি।
উথুরা ইউনিয়নের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শাহ শহিদুল হক শামিম জানান, রাস্তা সংস্কার কাজে নিন্মমানের নিমার্ণ সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। এমনকি সুরক্ষা দেয়াল না দিয়ে রাস্তাটির দুই পাশে দুইফিট করে প্রসস্ত করায় অল্পদিনের মধ্যেই সড়কটির সাইড ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. তারেক জানান, রাস্তার সংস্কার কাজের শুরু থেকেই অনিয়ম করা হচ্ছে। অনিয়মের বিষয়টি স্থানীয় সংসদ কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ ধনু ও ময়মনসিংহের সংরক্ষিত আসনের এমপি মনিরা সুলতানা মনিকেও জানানো হয়েছে। তবে এর প্রতিকার মিলেনি।
লেভার সদার্র মানিক মিয়া জানান, ঠিকাদার তাকে যেভাবে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন, সেভাবেই কাজ করা হচ্ছে বলে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের বলেন।
এ বিষয়ে ঠিকাদার লাবু মিয়া মুঠোফোনে অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, তার অনুপস্থিতিতে লেভাররা একটু অনিয়ম করে ফেলেছে, আমি সাইডে গিয়ে যেসকল স্থানে অনিয়ম হয়েছে, তা ঠিক করে দেয়া হবে।
ভালুকা উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা মোহা. রফিকুল ইসলাম বলেন, তিনিও অনিয়মের কথা শুনেছেন। তবে যে সকল স্থানে অনিয়ম করা হয়েছে, ঠিকাদারকে ডেকে তা পূণরায় কাজ করিয়ে নেয়া হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।