শেরপুরের নকলা উপজেলার মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ভাঙ্গন কবলিত নারায়নখোলা দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করা হয়েছে।
রোববার (১১ সেপ্টম্বর) উপজেলার চরঅষ্টধর ইউনিয়নের দক্ষিণ নারায়নখোলা এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ভাঙন রোধে বাধ নির্মাণের কাজ উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বুলবুল আহমেদ তালুকদার।
এসময় পানি উন্নয়ন বোর্ড জামালপুর অঞ্চলের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. শাহজাহান, চরঅষ্টধর ইউপির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানীসহ ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ তালুকদার বলেন, শেরপুরের মান্যবর জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাহেলা আক্তার গত ১২ আগস্ট ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ভাঙ্গন কবলিত নারায়নখোলা দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ভাঙ্গন কবলিত তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানান। তাঁর অনুরোধে ব্রহ্মপুত্র নদের তীর রক্ষায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ কাজ হাতে নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। এর ধারাবাহিকতায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ রোববারে শুরু করা হলো।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জামালপুর অঞ্চলের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহজাহান জানায়, এই ধাপে ১৮০ মিটার বাধ নির্মাণের জন্য প্রাকল্পিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৩ লাখ ২৩ হাজার ২০৫টাকা।
উল্লেখ্য, নকলা উপজেলার মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী এলাকা অব্যাহত ভাঙ্গনের ফলে দিন দিন ছোট হয়ে আসছে নকলা উপজেলার সমতল অঞ্চলের মানচিত্র। গত কয়েক বছরে নারায়নখোলা দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গন ও এর একটি পাকা ভবনসহ মসজিদ, মকতব, কবরস্থান, রাস্তা, কৃষি জমি, গাছ-পালা ও অনেক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গৃহহীন হয়েছে অনেক পরিবার। বাড়ি ছাড়া হয়ে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে ভাসমান হিসেবে বসবাস করছেন এ এলাকার অগণিত মানুষ। গত দুইবছরের ব্যবধানে নারায়নখোলা দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবন ও শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ নদীগর্ভে চলে গেছে।
এরই মধ্যে বিদ্যালয়টি তিনবার স্থানান্তর করতে হয়েছে। এবছর আবার ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ভাঙ্গন শুরু হওয়ায় হুমকিতে পড়েছে বিদ্যালয়টির অবশিষ্ট একটি পাকা ভবন ও একটি টিন সেট ঘর। চড়ম হুমকিতে আছে অগণিত বসতবাড়ি, কৃষি জমি ও কবরস্থান।
এমনসব খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশের পরে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ এলাকাবাসী যৌথভাবে ভাঙ্গরোধে নিরলস কাজ করলেও কোন কাজে আসেনি। এমতাবস্থায় কোন উপায় না দেখে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী এলাকাবাসী নদী ভাঙ্গন থেকে বাঁচতে ও বিষয়টি জনবান্ধব সরকারের নজরে আনতে মানববন্ধন করেন।