ব্রণের সমস্যায় কমবেশি সবাইকে পড়তে হয়। বিশেষ করে বয়ঃসন্ধিকালে কিশোরী-কিশোরীদের এই সমস্যা দেখা যায়। ব্রণ সাধারণত মুখে দেখা গেলেও অনেক সময় মাথা, পিঠ ও ঘাড় ও বুকেও দেখা দিতে পারে।
আমাদের দেশে ছেলেদের ১৬ থেকে ১৯ বছর বয়সে ও মেয়েদের ১৪ থেকে ১৬ বছর বয়সে ব্রণ হওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ২০ বছর বয়সের মাঝামাঝি সময় থেকে ব্রণ হওয়ার হার কমে যেতে থাকে। তবে অনেকে পরিণত বয়সেও এই সমস্যায় ভুগেন।
ব্রণের সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায় সম্পর্কে যুগান্তরকে পরামর্শ দিয়েছেন আল-রাজী হাসপাতালের চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দিদারুল আহসান।
কারণ
* টিনএজারদের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধিকালে অ্যান্ড্রোজেন হরমোনের আধিক্য।
* মাসিক বা গর্ভাবস্থায় হরমোনের মাত্রার পরিবর্তন।
* কসমেটিক, বিশেষ করে ঘন ঘন ময়েশ্চারাইজিং লোশন ব্যবহার বা মেকআপের প্রভাব।
* জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি, স্টেরয়েড, খিঁচুনি বা মানসিক রোগের ওষুধ ইত্যাদির প্রভাব।
* অত্যধিক গরম বা বেশি ঘর্মাক্ত হওয়া।
* তেলতেলে চুল ও মাথার খুশকি।
* মানসিক চাপ ও পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া।
* কেরোসিন বা কয়লার (যেমন, ফার্নিচারের বার্নিশ) প্রভাব।
* পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব ও নারীদের মাসিক ঋতুস্রাবের সঙ্গেও ব্রণের সম্পর্ক রয়েছে।
ধরন
ব্রণের নানা ধরন রয়েছে। ছোট ছোট গোল ফুসকুড়ি, লালচে ছোট ছোট গোটা, আবার পুঁজপূর্ণ বড় বড় চাকাও হতে পারে। ব্রণ টিপলে ভাতের দানার মতো বের হয়ে আসে। কিছু ব্রণ খুব যন্ত্রণাদায়ক হয়। এতে ত্বকে ছিদ্রও দেখা দিতে পারে। কারও কারও মুখে ব্রণের তীব্রতা বেশি থাকলে তা এবড়োথেবড়ো দেখায়।
চিকিৎসা
সচেতনতার মাধ্যমেই বেশিরভাগ ব্রণ দূর করা যায় বা কমানো যায়। তবে আক্রান্তের গুরুত্ব বিবেচনা করে ডার্মাটোলজিস্ট বা চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়। চিকিৎসা না করালে অনেক সময় ব্রণ ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি, বিশেষ করে ত্বকে গভীর প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য মলম প্রয়োগ, অ্যান্টিবায়োটিক অথবা রেটিনয়েডজাতীয় ওষুধ সেবনের প্রয়োজন হতে পারে।
* মাথায় খুশকি থাকলে অ্যান্টিড্যানড্রাফ শ্যাম্পু ব্যবহার করে খুশকি দূর করুন।
* অ্যালার্জি না থাকলে বেনজাইল পার-অক্সাইড লোশন ব্যবহার করতে পারেন।
কিছু ভুল ধারণা
অনেকে ব্রণ হলে মুখে সাবান ব্যবহার বন্ধ করে দেন অথচ এ সময় সাবান দিয়ে মুখ ধুলে উপকার হয়, কেননা সাবান মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করে এবং লোমকূপ পরিষ্কার রাখে।