অনুকুল আবহাওয়া, সার, কীটনাশকসহ বাজারে কৃষি উপকরণের পর্যাপ্ত সরবরাহ, সহনশীল দাম, সহজলভ্যতা, সেচের জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের সরবরাহসহ আবাদ উপযোগী পরিবেশ ইত্যাদি বিবেচনায় চলতি মৌসুমে শেরপুরের শ্রীবরদীতে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছে কৃষকরা।
ফাল্গুন মাসেই ধানের চারা রোপণের কাজ শেষ হয়েছে। এখন জমিতে পর্যাপ্ত সেচ, নিড়ানি, সার, কীটনাশক প্রয়োগসহ বোরো ফসলের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকরা। উপজেলার চলতি বছর বোরো আবাদে লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়েছে। উৎপাদনেও লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রমের প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের। তাইতো কৃষকের মুখে এখনই হাসির ঝিলিক পড়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ১৬-১৭ মৌসুমে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৭ হাজার ৫১০ হেক্টর। উৎপাদিত হয়েছে ৬৯ হাজার ১৭২ মেট্রিক টন চাউল। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে বোরো ধানখেতে নেক ব্লাস্ট (ধানের গলাপচা) রোগ দেখা দেওয়ায় বোরো আবাদ ভালো হয়নি। এবার কৃষকরা বোরো ধানের বীজতলা করেছে আধুনিক পদ্ধতিতে। আলোর ফাঁদ দিয়ে সনাক্ত করেছে ক্ষেতের পোকা মাকর। ব্যবহার হচ্ছে শেড পদ্ধতি।
কৃষি অফিসের অতন্ত্র জরিপ কার্যক্রমের আওতায় আনা হচ্ছে পিছিয়ে পড়া কৃষকদের। ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে ডাম সিডারের ব্যবহার। এককথাই উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক পর্যবেক্ষণ আর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে বাড়ছে উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা। চলতি ২০১৭-১৮ মৌসুমে শ্রীবরদী উপজেলায় ১৭ হাজার, ৮১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তার মধ্যে হাইব্রিড ৬ হাজার, ১৩০ হেক্টর, উফশী ১১ হাজার ৬৮০ হেক্টর। এ থেকে বোরো চালের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৭১ হাজার ২২৮ মেট্রিক টন। ইতোমধ্যেই লক্ষ্যমাত্রার অধিক জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। এবছর লক্ষ্যমাত্রার অধিক ধান উৎপাদন হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
উপজেলার গোশাইপুর ইউনিয়নের মাটিয়াকুড়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ জানান, সেচ খরচ এবং শ্রমের অধিক মুল্য ও কৃষি শ্রমিকের কিছু সমস্যা থাকলেও অনুকুল আবহাওয়ায় সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত সার, কীটনাশক, বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়ায় এবছর বোরো ফলন খুবই ভাল হবে।
উপজেলা গড়জড়িপা, গোশাইপুর, কেকেরচর, রাণীশিমূল ও সদরইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, নিড়ানি, সার দেওয়াসহ সার্বিক পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তারা জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এ বছর বোরো ধানের ফলন খুবই ভাল হবে। কিছুদিন পরই ঘরে ধান উঠবে। প্রান্তিক চাষীরা যাতে ধানের সঠিক মূল্য পায় এবং ধানের ন্যায্য বাজার নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি সঠিক পদক্ষেপ গ্রহনের দাবী জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ নাজমুল হাছান জানান, এবার এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে রয়েছে। আশা করছি কৃষকেরা ভালো ফলন পাবে। কৃষি অফিস থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর লক্ষমাত্রার অধিক ধান উৎপাদন হবে বলে তিনি আশা করেন।