শেরপুর থেকে ‘সোনার বাংলা’ বাসে চড়ে এক যুবক মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারী) বিকেলে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে তিনি চোখ বন্ধ করে ঝিমুচ্ছিলেন। কিন্তু নকলা পর্যন্ত আসার পর পরই হঠাৎ ওই বাসের আশপাশে লোক জনের কোলাহল শুনতে পান। সেই যুবক চোখ খুলে তাকিয়ে দেখেন তারই পেছনে বসে আছেন সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি! তাকে দেখে সে অবাক হয়ে যান।
গত জাতীয় নির্বাচনের পর থেকেই মতিয়া চৌধুরী নিজ নির্বাচনী এলাকা শেরপুর- ২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসা-যাওয়ার জন্য সাংসদ হিসেবে সরকারের দেওয়া বা ব্যাক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করছেন না তিনি। পাবলিক বাসে করেই সাধারণ মানুষের সাথে যাতায়াত করছেন।
এরই ব্যাতিক্রম হয়নি এবারও। রোববার রাতে রাজধানী ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে একটি পাবলিক বাসে চড়ে সাধারণ যাত্রীদের মতো নকলায় পৌঁছান মতিয়া চৌধুরী। এরপর সোমবার নালিতাবাড়ীতে ও মঙ্গলবার নকলায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেধাবী শিক্ষার্থী ও দরিদ্র মানুষের মাঝে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নগদ অর্থ ও শীতবস্ত্র কম্বল বিতরণ করেন।
এসব বিতরণ শেষে মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় তিনি নকলা উপজেলা শহরের দলীয় কার্যালয়ের সামনে শেরপুর থেকে ঢাকাগামী সোনার বাংলা নামে একটি পাবলিক বাসে উঠেন।
কিন্তু কেন প্রতিবার বাসে চড়ে বেগম মতিয়া চৌধুরী নিজ নির্বাচনী এলাকায় আসেন? এমন প্রশ্নের জবাবে নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের লোভ-লালসার রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে মিতব্যয়ীতা, সততা, নিষ্ঠা, সাহসিকতা ও ত্যাগ স্বীকারের প্রশ্নে তার তুলনা তিনি নিজেই। যে কারণে তিনি খুব সহজ সরল, সাদামাটা ও স্বাভাবিক জীবন যাপনে অভ্যস্ত। আর তাই দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য তথা একজন কেন্দ্রীয় প্রভাবশালী নেতা হবার পরও তার মাঝে কোন অহমিকা ও উচ্চাভিলাস নেই। পরিবর্তিত অবস্থায় পাবলিক বাসে চেপে নির্বাচনী এলাকায় যাতায়াত করা তার জীবন পাতারই এক বৈশিষ্ট।
এদিকে, নির্বাচনী এলাকায় বাসে আসা যাওয়া নিয়ে বেগম মতিয়া চৌধুরী নিজেই এর জবাব দিয়েছিলেন। গত বছর জাতীয় নির্বাচনে জয় লাভের পর নালিতাবাড়ীতে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় বক্তব্যকালে তিনি বলেছিলেন, আমার বাসে চড়ার অভ্যাস আছে। মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে দায়িত্ব পালন ও দলের জন্য কাজ করার অভ্যাসও আছে। এটা নতুন কিছু নয়। তাই এসব নিয়ে কথা না বলাই ভাল।