ঈদুর ফিতর উপলক্ষে সবচেয়ে বেশি বিক্রির আশা করেন শেরপুরের ফুটপাতের দোকানিরা। বছরের অন্য সময় ব্যবসা হলেও দুই ঈদের সময়ই তাদের মূল বেচাকেনা। তবে দু’দিন ধরে বৃষ্টিতে ফুটপাতের কেনাকাটা আগের বছরের তুলনায় অনেক কম হচ্ছে তাদের। বৃষ্টির কারণে ফুটপাতের দোকান ঠিক মতো খোলা রাখতে পারছে না বিক্রেতারা। অন্যদিকে পণ্য কেনার জন্য ক্রেতারা দোকানের সামনে দাঁড়াতে না পারায় ফুটপাত থেকে ঈদের কেনাকাটা করতে পারছে না।
শহরের নিউ মার্কেট, গোয়ালপট্টি, মুন্সিবাজার ও নয়ানীবাজার ঘুরে দেখা যায়, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা মুখ ভার করে বসে আছে। নয়ানি বাজারে শার্ট ও শিশুদের প্যান্ট বিক্রি করছেন রফিক মিয়া। তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে তো বসাই মুশকিল। সামন্য একটু বৃষ্টি হলেও এখানে পানি থাকে থাকে। আমরা নিজেরা ঠিক মতো দাঁড়াতে পারি না। আর ক্রেতারা তো এই পানির মধ্যে এসে কাপড় কিনবে না। প্রথম দিকে ব্যবসা খুব ভালো হয়েছে। তবে দু’দিন ধরে বৃষ্টিতে ঈদের ব্যবসা খারাপ হচ্ছে।
মুন্সিবাজার বিভিন্ন বিপণি বিতানের সামনের ফুটপাতে প্যান্ট, শার্ট, গেঞ্জি, লুঙ্গি, গামছা, টুপি, ঘড়ি ও জুতা বিক্রি করেন অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। ঈদ উপলক্ষে হরেক পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসলেও বৃষ্টির উৎপাতে তারা শঙ্কিত। বাচ্চাদের পোশাক বিক্রেতা ফকরুল জানালেন, ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন ডিজাইনের বাড়তি পোশাক এনেছেন তিনি। কিন্তু বৃষ্টির কারণে বিক্রি তেমন হচ্ছে না।
নিউ মার্কেট ফুটপাতের ব্যবসায়ীরাও বৃষ্টি বিড়ম্বনায় হতাশার কথা জানালেন। ওই এলাকার ফুটপাতে কাপড় নিয়ে মালেক মিয়া বলেন, আমরা তো রাস্তায়ই দোকানদারি করি। কিন্তু দু্’দিন ধরে বৃষ্টির কারণে ব্যবসা করতে পারছি না।
নয়ানি বাজারে ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা বৃষ্টি উপেক্ষা করেই পলিথিন টানিয়ে কোনোরকমে দোকান সচল রেখেছেন। নয়ানি বাজারে কাপড় বিক্রেতা রহিম মিয়া বলেন, বার বার পলিথিন দিয়ে ঢাকতে হয়, কাপড় ভিজেও যায়। কি আর করবো, বাড়িতে থাকলে তো আর বিক্রি হবে না। পোলাপাইন নিয়ে তো ঈদ করতে হবে। শুধুমাত্র ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নন, বিপাকে আছেন ফুটপাতের দোকানে কেনাকাটা করতে আসা নিম্ন আয়ের মানুষও। নিম্ন আয়ের মানুষের অনেকেই রোজার প্রথম দিকে বড় বড় বিপণি বিতানে ঢুঁ মেরে পোশাক নেড়েচেড়ে দেখে শখ মেটালেও শেষ মেষ তাদের চাহিদা মেটানোর আশ্রয়স্থল হয় ফুটপাতের দোকানগুলো।
গোয়ালপট্টি ফুটপাতের দোকানে কেনাকাটা করতে এসেছিলেন রাবেয়া খাতুন। তিনি বলেন, মার্কেট থেকে তো কাপড় কেনার সামর্থ্য আমার নাই। মেয়ের জন্য কাপড় কিনতে আসছি, ছোট মানুষ। ওদেরই তো ঈদ।
নিউ মার্কেট ফুটপাতের দোকানে কাপড় কিনতে আসা রুবেল মিয়া বলেন, এবার কাপড়ের দাম বেশি। তাই ফুটপাত থেকেই কিনতে হবে। তাও তো ছেলে-মেয়েরা ঈদ করবো, নতুন কাপড় পড়ে।