‘এ বয়সে বিয়ে?’ প্রশ্নটা যেকেউ করতে পারেন। তবে একাকীত্ব কাটাতে দুই বৃদ্ধের বিয়ের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে পুরো গ্রামবাসী। দুজনেরই ছেলে-মেয়ে ও নাতি-নাতনি আছে। তারাও উপস্থিত ছিলেন সেই বিয়েতে। দুই প্রবীণের এক হওয়াকে ঘিরে গ্রামজুড়ে চলছে আনন্দ উৎসব। নবদম্পতির দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়।
সদ্য বিয়ে করা এ যুগল হলেন নাটোর সদর উপজেলার পুকুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের বৃদ্ধ আহাদ আলী ও আমেনা বেগম। এক যুগ আগে আহাদ আলীর স্ত্রী মারা গেছেন এবং আমেনা স্বামীকে হারান প্রায় ১০ বছর আগে। জীবনের নিঃসঙ্গতা কাটাতে বুধবার বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন এই জুটি।
পাত্রীর বয়স ৮০ বছর, পাত্র ১০৫ বছরের। চাঞ্চল্যকর এই বিয়েতে ৫০ হাজার ৬৫০ টাকা দেনমোহর ধার্য করা হয়। পরে নগদ ৬৫০ টাকা পরিশোধিত দেনমোহরে ওই দম্পতির বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের করার পর বৃদ্ধ পাত্রের মুখে ফোটে ‘কোটি টাকার হাসি’।
দিঘাপতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার ওমর শরীফ চৌহান বলেন, বেশ ধুমধাম করেই বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়। এসময় স্থানীয়রা চরম আনন্দে বিয়ের অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। পরে তারা নবদম্পতির দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া করেন এবং মিষ্টি বিতরণ করেন।
শতবর্ষী বৃদ্ধার বিয়েতে গ্রামের প্রায় শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। গ্রামের বাসিন্দারা জানালেন, পাত্র আহাদের চার ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। তার নাতি-নাতনি থাকলেও স্ত্রী না থাকার কারণে বৃদ্ধ বয়সে বেশ একাকীত্বে জীবন কাটাতেন আহাদ। হঠাৎ গ্রামবাসীর অনুরোধে তিনি তার প্রয়াত ছোট ভাই টুলু মণ্ডলের স্ত্রী আমেনা বেগমকে বিয়ে করতে রাজি হন।
এদিকে শতবর্ষী বর-কনের বিয়ের খবর এলাকায় এখন সবার মুখে মুখে ফিরছে। প্রতিবেশীদের কেউ কেউ খবরটি বেশ মজা করেই উপস্থাপন করছেন। আবার কেউ কেউ নিন্দুকের সুরে প্রচার করছেন। তবে এসব কানে নিচ্ছেন না শতবর্ষী আহাদ আলী মণ্ডল ওরফে আদি। বরং তাদের দাম্পত্য জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত যাতে ভালো সময় কাটে, সেজন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তারা।