বিয়ে করাই তার ব্যবসা। ৪৫ বছর বয়সে ৬০টি বিয়ে করেছেন তিনি। দেশের বিভিন্ন জেলায় আত্মীয়ের সম্পর্ক গড়ে, বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িয়ে, কোথাও চাকরি, কোথাও অবিবাহিত এবং কোথাও স্ত্রী মারা গেছে এসব কথা বলে ৬০টি বিয়ে করেন তিনি। ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে অসহায় নারীদের বিয়ে করে টাকা হাতিয়ে নেয়াই তার বিয়ের রহস্য।
অবশেষে নেত্রকোনা পূর্বধলা থানায় ৬০তম স্ত্রী রোজী খানমের মামলার জালে ধরা পড়েন আবু বক্কর নামে বিয়েপাগল এই যুবক। মাস্টার্সপড়ুয়া ৬০তম স্ত্রী রোজী খানম ধরে ফেলেন আবু বক্করের প্রতারণা।
পূর্বধলা থানায় আবু বক্করের ৬০তম স্ত্রী রোজী বেগমের দায়ের করা মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, রোজী বেগমের আত্মীয়ের সঙ্গে পূর্বপরিচিত হওয়ায় ওই এলাকায় যাতায়াত করতেন আবু বক্কর। সেখানে নিজেকে একটি ওষুধ কোম্পানির এরিয়া ম্যানেজার পরিচয় দিতেন তিনি। অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে চলতি বছরের আগস্ট মাসে শাহিন আলম, পিতা আকরাম, গ্রাম-কুতুবেরচর, সাধুরপাড়া, বকশিগঞ্জ ঠিকানা ব্যবহার করে রোজীকে বিয়ে করেন আবু বক্কর।
সেই থেকে রোজীর বাড়িতে বসবাস করেন। বিয়ের কিছুদিন পর রোজীর পরিবারের কাছে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন তিনি। এতে রোজীর পরিবার অপারগতা প্রকাশ করে। পরে শ্যালককে ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি দেয়ার কথা বলে শ্বশুরের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা নিয়ে উধাও হন আবু বক্কর। এরপর থেকে রোজীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। পরে রোজীর পরিবার খোঁজ নিয়ে জানতে পারে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে বিয়ের নামে প্রতারণা করেছেন আবু বক্কর।
গ্রেফতারের পর আবু বক্কর পুলিশকে জানান, এভাবে প্রতারণা করে এ পর্যন্ত ৬০টি বিয়ে করেছেন তিনি। বর্তমানে সাত সন্তানের জনক আবু বক্কর। শুধু টাকার লোভে বিয়ের নামে প্রতারণা করে আসছেন। টাকা পেলেই স্ত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি।
ইসলামপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) আনছার আলী বলেন, প্রতারণা করে এ পর্যন্ত ৬০টি বিয়ে করেছেন আবু বক্কর, যা বাংলাদেশে বিয়ের ক্ষেত্রে নতুন রেকর্ড। নিজেই এসব বিয়ের কথা স্বীকার করেছেন। এলাকায় সবাই তাকে প্রতারক হিসেবে জানেন। ৬০তম স্ত্রী রোজী খানমের মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ইসলামপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ মো. সুমন মিয়া বলেন, বিয়েপাগল প্রতারক আবু বক্করকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এ ধরনের প্রতারকদের আইনের আওতায় আনতে সবসময় তৎপর পুলিশ।