প্রথমে গৃহ পরিচারিকা হিসেবে কাজে যোগ দিতেন। কাজ ও ব্যবহারের দিয়ে জয় করতেন পরিবারের সদস্যদের মন। এরপর সুযোগ বুঝে সম্পর্কে জড়িয়ে হাতিয়ে নিতেন সম্পত্তি। ভারতের গাজিয়াবাদ এলাকার এক গৃহবধূর বিরুদ্ধে এমন প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তদন্তে নেমেছে দিল্লি পুলিশ। ওই নারী একটি চক্রের সদস্য বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২৫ বছর বয়সী ওই নারীর নাম প্রীতি বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তারা। সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে একটি প্রভাবশালী পরিবার। ওই অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করে পুলিশ। প্রীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এক সাবেক উপাচার্যের দোতলা বাড়ি নিজের নামে করে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। শহরের মুরাদনগরে ওই বাড়ির দাম ৫ কোটি রুপি। ওই বাড়িতে প্রথমে পরিচারিকা হিসেবে কাজ করতেন প্রীতি।
তদন্ত শুরু করে পুলিশ জানতে পারে শচীন নামের এক ব্যক্তি প্রীতিকে আলাপ করিয়ে দেন মুরাদনগরের বাসিন্দা ৭০ বছর বয়সি বৃদ্ধা সুধা সিংয়ের সঙ্গে। শচীন ও প্রীতি জানতেন বৃদ্ধা তাঁর বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ২৮ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে থাকেন। প্রীতি ওই বাড়িতে পরিচারিকা হিসেবে কাজে যোগ দেওয়ার ১ বছরের মধ্যেই মারা যান সুধা। কিন্তু এর মধ্যে গোপনে বৃদ্ধার বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ছেলে শিবমকে বিয়ে করেন ওই পরিচারিকা।
পুলিশের কাছে বৃদ্ধার মেয়ে আকাঙ্ক্ষা জানান, মায়ের মৃত্যুর পর তিনি ভাইয়ের দেখাশোনা করতে চেয়ে প্রীতিকে চলে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু ওই পরিচারিকার দাবি, তিনি শিবমের বিবাহিত স্ত্রী। এর পর তিনি সম্পত্তি দাবি করেন বলে অভিযোগ। আকাঙ্ক্ষার অভিযোগ, প্রীতি তাঁর ভাই শিবমকেও বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন।
আকাঙ্ক্ষার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয় শচীনকে। আর প্রীতিকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর মধ্যে ওই নারীর বিরুদ্ধে প্রতারণার একাধিক অভিযোগ আসে। অভিযোগের মধ্যে অন্যতম, ২০১৪ সালে দিল্লিতে রাকেশ সিং নামে এক সম্পত্তির দালালকে বিয়ে করেছিলেন প্রীতি। কয়েক মাস পর তিনি বিবাহবিচ্ছেদ দাবি করেন। সেইসঙ্গে চেয়ে বসেন সম্পত্তির একাংশ। রাকেশ অস্বীকার করায় তাঁর বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়। শেষ পর্যন্ত প্রীতিকে বড় অঙ্কের অর্থ দিতে হয় রাকেশকে।
পুলিশের ধারণা, এখন পর্যন্ত পাঁচবার বিয়ের নামে প্রতারণা করেছেন ওই নারী। তিনি একটি প্রতারক চক্রের সদস্য। চক্রের বাকিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।