দ্বিতীয় ধাপে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় নেত্রকোনা সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগের ৯ নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এই তথ্য জানা যায়।
সাময়িক বহিষ্কার হওয়া আওয়ামী লীগ নেতারা হলেন— নেত্রকোনা সদর উপজেলার ঠাকুরকোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমান, সাবেক জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মেদনী ইউনিয়নের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমান খান, আওয়ামী লীগের নতুন যোগদান করা মৌগাতী ইউনিয়নের একেএম মহিউল ইসলাম (ফজল), সিংহের বাংলা ইউনিয়নের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আলী আহসান সুমন ও ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাক্কারুল ইসলাম মিলন, জেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কালিয়ারা গাবড়াগাতী ইউনিয়নের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী আজগর খান পাঠান (শারীফ), চল্লিশা ইউনিয়নের সভাপতি ও বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার ফকির, জেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও বিশিউড়া ইউনিয়নে মো. আবুল কালাম, বর্তমান চেয়ারম্যান কাইলাটি ইউনিয়নে বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আনোয়ার হোসেন।
দ্বিতীয় দফায় ১১ নভেম্বর নেত্রকোনা সদর উপজেলার ১২ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে মদনপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় ওই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন হচ্ছে না। সদরে বাকি ১১টিতে ৩৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের একাধিক নেতাকর্মী বলেন, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর সাময়িকভাবে বহিষ্কৃত এসব প্রার্থীকে নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করা হলেও আটটি ইউনিয়নের ৯ প্রার্থী ভোটের মাঠে থেকে যান। এমন পরিস্থিতিতে গেল গত ২৯ অক্টোবর তাদের সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কার হওয়া প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান কালিয়ারা গাবড়াগাতী ইউনিয়নের এ আর আলী আজগর খান শরীফ বলেন, আমি দলের একনিষ্ঠ কর্মী। জনগণকে নিয়েই আমার দল। আমি গতবার জনগণের ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। আমি আমার ইউনিয়নের জনগণের ইচ্ছার সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেই প্রার্থী হয়েছি।
মেদনী ইউনিয়নের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান খান বলেন, আমরা যারা স্থানীয় সরকারের নির্বাচন করি তারা দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনের লক্ষ্যে মাঠে কাজ করি। স্থানীয়দের সুখে-দুখে পাশে থাকি। কিন্তু স্থানীয় জনমত না নিয়ে কেন্দ্র থেকে প্রার্থী বাচাই করা হয়েছে। ফলে, জনগণের চাপে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য হয়েছে। আশা করি, জনগণ সেটা প্রমাণ করবে।
জেলার আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, তাদের নির্বাচনে না গিয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করায় তাদের দলীয় পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে।
#যুগান্তর