শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে বিদ্যুতায়িত করে হাতি হত্যার ঘটনায় মামলা করেছে বন বিভাগ। সোমবার (৮ মে) রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মকরুল ইসলাম আকন্দ ঝিনাইগাতী থানায় বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এ মামলা করেন।
মামলায় ঘাগড়া মোল্লাপাড়ার এলাকার কৃষক নুহু মিয়াসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও দুইজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার পর থেকে কৃষক নুহু মিয়া পলাতক রয়েছেন।
রেঞ্জ কর্মকর্তা মকরুল ইসলাম আকন্দ সাংবাদিকদের মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত ৬ মে সন্ধ্যায় ২৫ থেকে ৩০টি হাতি খাদ্যের সন্ধানে পাহাড় থেকে নেমে আসে। এ সময় হাতিগুলো উপজেলার গারো পাহাড়ের বাকাকুড়া ঢাকাই পট্টিতে নুহু মিয়ার ধান ক্ষেতে নামে। অভিযুক্ত নুহু মিয়া হাতির ক্ষতি করতে আগে থেকেই ক্ষেতে বৈদ্যুতিক তার ফেলে রাখেন। ওই তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একটি হাতি মারা যায়। পরে সেখান থেকে বন বিভাগের টহল দল হাতির মরদেহ উদ্ধার করে।
হাতি হত্যায় মামলার আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলন। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মেরাজ উদ্দিন বলেন, হাতি আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ। হাতি আমাদের গারো পাহাড়ের অলংকার। আর হাতির জায়গায় মানুষ অনুপ্রবেশ করেছে, হাতি এখন আবাস ও খাদ্য সংকটে রয়েছে। আমরা হাতি হত্যায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
একই দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের ট্রেইনার আদনান আযাদ। তিনি বলেন, হাতি হাতির জায়গায় বাস করে। ঝিনাইগাতীর একটা বিশাল অংশজুড়ে গারো পাহাড়ের অবস্থান ছিল। কিন্তু দখলের কবলে আয়তন হারিয়েছে পাহাড়টি। তাই হাতিসহ বিভিন্ন প্রাণী সেখানে হুমকিতে আছে। আমরা গারো পাহাড়ে দ্রুত অভয়ারণ্য গড়ে তোলার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি হাতি হত্যায় জড়িতরা যেন আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে আসতে না পারে, সেই দাবিও করছি।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত সরকারি হিসাবে শুধু শেরপুরে ২৫টি হাতির মৃত্যু হয়েছে।