সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, রাষ্ট্রের অন্যান্য প্রধান স্তম্ভের পাশাপাশি বিচার বিভাগও জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতার উর্ধ্বে নয়। আর সেই জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতার প্রধান শর্ত বিচারপ্রার্থী মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। বিচার বিভাগ সেই কাজটি করছে বলেই বিচার অঙ্গণে স্বচ্ছতা ফিরে আসছে। সেইসাথে মানুষ এখন ন্যায়বিচার পাচ্ছে। তিনি ৫ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকেলে শেরপুর জেলা আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওই কথা বলেন। তিনি শেরপুরের বিচারকদের স্বচ্ছতা, বার ও বেঞ্চের মধ্যে বিরাজমান সুন্দর সম্পর্ক এবং কলুষমুক্ত বিচারাঙ্গন প্রতিষ্ঠায় বার-বেঞ্চের সমন্বয় বিষয়ে আইনজীবীদের অভিমত প্রসঙ্গে বলেন, এটি সম্ভব হয়েছে আইনজীবীদের সদিচ্ছা ও আন্তরিকতার কারণে। এর মধ্য দিয়ে সমগ্র বিচার অঙ্গণই একদিন কলুষমুক্ত ও স্বচ্ছ পরিবেশ ফিরে আসবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আইনজীবীদের সদিচ্ছা ও আন্তরিকতা যতো বাড়বে বিচারপ্রার্থী মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা ততোই সহজ হবে। এছাড়া তিনি শেরপুরে একই অঙ্গণে দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত সিজেএম আদালত ভবন নির্মাণে আইনজীবীদের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান ও তা দ্রুত নির্মাণসহ বিদ্যুৎ আদালত প্রতিষ্ঠাসহ বিচার অঙ্গণের বিভিন্ন সমস্যা প্রধান বিচারপতির মাধ্যমে দ্রুত সমাধানে আইনজীবীদের আশ্বস্ত করেন।
তিনি স্বচ্ছতার আপেক্ষিকতার প্রশ্ন তুলে ‘শেরপুরে শান্ত পরিবেশের পরও কোন ঘটনা ছাড়াই ক্রিয়েটিভ মামলা-গ্রেফতারসহ রিমান্ড আবেদন এবং মেকানিক্যাল রিমান্ড আদেশ’ বিষয়ক এক বিএনপিপন্থী আইনজীবী নেতার অভিযোগমূলক বক্তব্য ও একই মতাদর্শের অনুসারী অপর এক নেতার তা সমর্থন প্রসঙ্গে বলেন, আদালতের কাছে কোন মামলা হয়রানীমূলক বলে মনে হলে তার সুবিধা আসামীপক্ষ পেয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আদালতের মোটিভের উপর তা নির্ভর করে। তারপরও ওইসব সমস্যা স্থানীয়ভাবে সমাধানের পরামর্শ দেন তিনি।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধারের সভাপতিত্বে সমিতির ২নং বার ভবনে আয়োজিত ওই মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট খন্দকার মাহবুবুল আলম রকীব, সাবেক সভাপতি এডভোকেট মোঃ সিরাজুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আব্দুল কাদের খান, এডভোকেট আবুল মানসুর স্বপন ও এডভোকেট এমকে মুরাদুজ্জামান, সহ-সভাপতি এডভোকেট হরিদাস সাহা, সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান, এডভোকেট প্রদীপ দে কৃষ্ণ, এডভোকেট দেলোয়ার হোসেন, এডভোকেট শক্তিপদ পাল, এডভোকেট সুধাংশু কালোয়ার, এডভোকেট আব্দুর রহিম বাদল, এডভোকেট সুব্রত কুমার দে ভানু, এডভোকেট আরিফুর রহমান সুমন, এডভোকেট রেদওয়ানুল হক আবীর, এডভোকেট মেরাজ উদ্দিন চৌধুরী, এডভোকেট আশরাফুন্নার রুবী, এডভোকেট ইয়াসমীন আক্তার প্রমুখ। ওইসময় সুপ্রীম কোর্টের সহকারী রেজিস্টার সৈয়দ মোস্তফা রেজা নূরসহ সমিতির বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা-সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে মঙ্গলবার রাতে সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে তিনি বিচারক ও আইনজীবীদের সাথে পৃথক মতবিনিময়ে মিলিত হন।
উল্লেখ্য, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ২ দিনের পরিদর্শনে শেরপুর অবস্থান করছেন।