বিএনপি সরকারের ব্যর্থতার কারণেই ৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে দেশে লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে বুধবার ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) ৫০ বছর পদার্পণ উদযাপনের অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন তিনি। অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সিপিপির চারটি ইউনিটের উদ্বোধন করেন সরকারপ্রধান।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিষ্ঠিত সিপিপির ৫০ বছর পূর্তি এবং আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উদযাপন উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
দুর্যোগে ঝুঁকি এড়াতে মানুষকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের ভৌগোলিক অবস্থাই এমন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করেই চলতে হয়। এজন্য সরকারের বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি দুর্যোগের ঝুঁকি এড়াতে সাধারণ মানুষকেও সচেতন থাকতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভবনসহ স্থাপনা করার সময় নিয়ম মেনে করতে হবে। আগুন লাগলে, ভূমিকম্প হলে যাতে উদ্ধার কাজসহ অন্যান্য কাজগুলো করা যায়। দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের সরকার সব ব্যবস্থা নিয়েছে, অন্য কোনো সরকার এগুলোর দিকে নজর দেয়নি। যতটুকু উদ্যোগ আমরা নিয়েছি, এগুলো জাতির পিতাই শিখিয়ে গেছেন।
ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশ এখন বিশ্বের আদর্শ দেশ এমন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন ঝুঁকি মোকাবিলায় আমরা বিশ্বের আদর্শ দেশ। এই মর্যাদা যেনো ধরে রাখতে পারি। আমাদের যেন শুনতে না হয়, যত মানুষ মরার কথা ছিল, তত মানুষ মারা যায়নি। আমরা মনে করি, এই দেশ আমাদের। যত ঝুঁকি আসুক, উন্নয়ন কাজ অব্যাহত রাখতে হবে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা আরও বলেন, করোনার প্রকোপের পর দেশে দুই কোটি পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। দেশের অন্তত ৮০ ভাগ মানুষকে করোনার টিকা দেওয়া হবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন।
অনুষ্ঠানে ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ৫০ বছর: বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা’ শীর্ষক প্রামাণ্য চিত্র দেখানো হবে। সিপিপির ৫০ বছর উপলক্ষে স্বেচ্ছাসেবক সংগঠক ও স্বেচ্ছাসেবককে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হবে। সিপিপি স্বেচ্ছাসেবকদের মহড়াও দেখানো হবে (কক্সবাজার থেকে সংযুক্ত)।
প্রধানমন্ত্রী সিপিপির দ্রুত সাড়াদান ইউনিট, পানি থেকে উদ্ধার ইউনিট, অতি জোয়ার মনিটরিং ও সাড়াদান ইউনিট ও খেলায় খেলায় দুর্যোগ প্রস্তুতির উদ্বোধন করেন।
জাতিসংঘের দুর্যোগ প্রশমন কার্যালয় (ইউএনডিআরআর) এ বছরের প্রতিপাদ্য নির্বাচন করেছে ‘দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে, কাজ করি একসাথে’। আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসে এ বছর জাতীয়ভাবে প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘মুজিববর্ষের প্রতিশ্রুতি, জোরদার করি দুর্যোগ প্রস্তুতি।’