শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে অগণিত মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে চির বিদায় নিয়েছেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির সদস্য, কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা। ২২ নভেম্বর সোমবার বাদ মাগরিব শহরের তারাগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্মরণকালের রেকর্ডসংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে তারাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে মা-বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
জানাজার পূর্বে কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশার স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের হুইপ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক এমপি, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ মাহমুদ বাবু, নৌ-পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব ও এসডিএফ’র চেয়ারম্যান আবদুস সামাদ ফারুক, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সহকারী কৃষিবিদ ডা. আওলাদ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল পিপি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর রুমান, শেরপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম, নালিতাবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান লেবু, নকলা উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ্ মো. বুরহান উদ্দিন, শ্রীবরদী উপজেলা চেয়ারম্যান এডিএম শহিদুল ইসলাম, ফুলপুর উপজেলা চেয়ারম্যান রাসেল উদ্দিন, নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা জিন্নাহ, নালিতাবাড়ী পৌরসভার মেয়র আবু বক্কর সিদ্দিক, উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক নুরুল আমিন, সেকান্দর আলী কলেজের অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল, শহীদ আব্দুর রশীদ কলেজের অধ্যক্ষ মো. সিরাজউদ্দৌলা, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কৃষিবিদ জাস্টিজ, জেলা যুবলীগের সভাপতি আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান, জেলা পরিষদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন ছানু, শেরপুর সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি মোহাম্মদ বায়েযীদ হাছান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শোয়েব হাসান শাকিল, নালিতাবাড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান হাফিজ, বদিউজ্জামান বাদশার ছেলে রাগীব হাসান ভাষণ প্রমুখ।
হুইপ আতিক তার বক্তব্যে বলেন, বদিউজ্জামান বাদশা দলের জন্য একজন নিবেদিত প্রাণ ও ত্যাগী নেতা ছিলেন। তার মৃত্যুতে দলের অপূরণীয় ক্ষতি হলো। বক্তব্যের এক পর্যায়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন হুইপ আতিক। সেইসাথে তার জীবদ্দশায় কারো সাথে কোনো ভুলভ্রান্তি থাকলে পরিবারের সকলের পক্ষ থেকেও ক্ষমা চান তিনি।
এর আগে নিজ এলাকা নালিতাবাড়ীতে কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশার লাশ পৌঁছামাত্র সেখানে প্রিয় নেতাকে শেষবারের মতো দেখতে আসেন আত্মীয়-স্বজন, দলীয় নেতা-কর্মী, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শুভাকাঙ্খী হাজারও সাধারণ মানুষ। তার জানাজায় বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেয়।
এছাড়া বদিউজ্জামান বাদশার প্রথম জানাজা রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার বাসভবনে সকাল সাড়ে ৭টায়, দ্বিতীয় জানাজা ঢাকার ফার্মগেট খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট চত্বরে সকাল সাড়ে ৯টার এবং তৃতীয় জানাজা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বেলা দেড়টার অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ চতুর্থ জানাজা শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সরকারি তারাগঞ্জ পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বাদ মাগরিব অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, ক্যান্সারে আক্রান্ত বদিউজ্জামান বাদশাকে গত ৮ নভেম্বর ভারতের চেন্নাই থেকে ফেরত নিয়ে আসার পর রাজধানী ঢাকার বিআরবি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে বিএসএমএমইউ-তে স্থানান্তর করা হয়। এরপর গত ১৬ নভেম্বর বিএসএমএমইউ থেকে তাকে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে আইসিইউতে থাকাবস্থায় সোমবার রাত পৌণে ৩টার দিকে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই সন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে যান।