শেরপুরের নকলায় ড্রাগন ফল চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। নকলা উপজেলার পোলাদেশী, বাছুর আলগা, মোজার ও রামপুর এলাকার কয়েকজন চাষী বানিজ্যিক ভিত্তিতে গত কয়েক বছর ধরে ড্রাগন ফল চাষ করছেন। ড্রাগন একটি ফণি মনসা প্রজাতির ফল। থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম ও গনচিন প্রভৃতি দেশে এ ফলের চাষ হয়ে থাকে। সর্বপ্রথম ২০০৭ সালে থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করে পরীক্ষা মুলক ভাবে দেশের কোন কোন এলাকায় ড্রাগন ফল চাষ শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে ড্রাগন চাষের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় ২০১২ সালে তৎকালীন কৃষিমন্ত্রী ও নকলা-নালিতাবাড়ীর এমপি মতিয়া চৌধুরীর নির্দ্দেশে জামালপুর হর্টিকালচার সেন্টার নকলা উপজেলার ৩শ ২০জন নির্বাচিত প্রান্তিক চাষীকে ড্রাগনফল গাছের কাটিং কৃত চারা ও চাষের জন্য কৃষক প্রশিক্ষণসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ বিনামূল্য প্রদান করে।
বর্তমানে এসব ড্রাগন চাষীরা ড্রাগন ফল বিক্রি করে ও নিজেরা চারা কাটিং করে বিক্রির মাধ্যমে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। ফলে বাণিজ্যিক ভাবে ড্রাগন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অন্যান্য প্রান্তিক চাষিরা।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায় উপজেলার বানেশ্বর্দী, মোজার বাজার, পোলাদেশী ও রামপুর গ্রামের অর্ধশতাধিক চাষির ড্রাগন গাছে সাদা-হলুদ বর্ণের দৃষ্টিনন্দন অসংখ্য ফুল ঝুলছে। ফুল থেকেই হবে ফল। খেতে সু-স্বাদু পুষ্টি ও ওষুধী গুন সমৃদ্ধ এ ফল বিক্রি হবে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে। বাজারে রয়েছে এর ব্যপক চাহিদা।
ড্রাগন চাষীদের চোখে মুখে তৃপ্তির হাসি । তারা বলেন, ড্রাগনফুল রাতে ফোটে, তাই একে নাইট কুইনও বলা হয়। কৃষি বিজ্ঞানীদের মতে শেরপুর জেলার মাটি ও আবহাওয়া ড্রাগন চাষের উপযোগি ফলে এ অঞ্চলে ড্রাগন চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলে জেলার অর্থনৈতিক সম্মৃদ্ধি সাধিত হবে এবং বৈপ্লবিক উন্নতি ঘটবে।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, বর্তমানে নকলা উপজেলায় আট শতাধিক ড্রাগন ফলের গাছ রয়েছে, এসব গাছের ফলনও হয়েছে আশানুরূপ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পরেশ চন্দ্র দাস জানান, কৃষকদের ড্রাগন ফল চাষে আগ্রহী করতে মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ দিয়েছেন। বাড়ীর আঙ্গীনা ও অনাবাদি জমিতে ড্রাগন ফল চাষ করে যেকেউ স্বাবলম্বী হতে পারেন।