ইতিহাস কথা বলে, ইতিহাস অনুপ্রেরণা জোগায়। ইতিহাস প্রেমী ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য বগুড়া একটি লোভনীয় জেলা। মহাস্থানগড় বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রাচীন পুরাকীর্তি। পূর্বে এর নাম ছিল পুণ্ড্রবর্ধন বা পুণ্ড্রনগর। এক সময় মহাস্থানগড় বাংলার রাজধানী ছিল। এখানে মৌর্য, গুপ্ত, পাল, সেন সাম্রাজ্যের প্রচুর নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে।
ঘুরে আসতে পারেন হাজার বছর আগের শহর এবং ঐতিহাসিক বাংলার রাজধানী মহাস্থান গড় থেকে। বগুড়া শহর থেকে মহাস্থান গড়েরর দুরত্ব মাত্র ১৩ কি.মি.। প্রাচীণ এই পর্যটন কেন্দ্রের অন্যতম আকর্ষণ হলো হাজার বছরের নানা নির্দশন।
যা দেখবেন এখানে-

শীলাদেবীর ঘাট-
মহাস্থান গড়ের পশ্চিম পাশেই রয়েছে ঐতিহাসিক কালীদহ সাগর আর পদ্মাদেবীর বাসভবন। এসব দেখে আপনি যেতে পারনে শীলাদেবীর ঘাটে। শীলাদেবী ছিলেন পরশুরামের বোন। এই ঘাটের পশ্চিম পাশেই রয়েছে জিউৎকুন্ড নামে একটি বড় কুপ। কথিত আছে এই কুপের পানি পান করে পরশুরামের আহত সৈন্যরা সুস্থ হয়ে যেত।

গড়ের মিউজিয়াম-
এসব অলৌকিক আর পৌরাণিক নিদর্শন দেখার পর আপনি যেতে পারেন গড়ের মিউজিয়ামে। মহাস্থান গড় খননের ফলে মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও সেন যুগের বিভিন্ন দ্রব্যাদিসহ অনেক দেবদেবীর মূর্তি পাওয়া গেছে যা এই জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে এখনও।

বেহুলার বাসর ঘর-
অনেক গল্প রয়েছে বেহুলার বাসর ঘর নিয়ে। আপনি চাইলে বেহুলার বাসর ঘরটাও দেখতে পারবেন। এ জন্য মহাস্থান বাসস্ট্যান্ড থেকে আপনাকে আরও ২ কি. মি.দক্ষিণ পশ্চিমে যেতে হবে। এখানে একটি বৌদ্ধ স্তম্ভ রয়েছে যা সম্রাট অশোক নির্মাণ করেছিলেন। স্তম্ভের উচ্চতা প্রায় ৪৫ ফুট। স্তম্ভের পূর্বার্ধে রয়েছে ২৪ কোন বিশিষ্ট চৌবাচ্চা সদৃশ একটি গোসল খানা ।এটি বেহুলার বাসর ঘর নামেই পরিচিত।

সুলতান মাহমুদের মাজার-
এসব নির্দনের পাশাপশি রয়েছে শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী মাহি সাওয়ার (র:) এর মাজার। মহাস্থান বাস স্ট্যান্ড থেকে কিছুটা পশ্চিমে এই মাজারটি অবস্থিত। কথিত আছে হযরত মীর বোরহান নামক একজন মুসলমান এখানে বাস করতেন। পুত্র মানত করে গরু কোরবানী দেয়ার অপরাধে রাজা পরশুরাম তার বলির আদেশ দেন এবং তাকে সাহায্য করতেই মাছের পিঠে আরোহন করে এই ওলির আগমন ঘটে। সে জন্যই তাঁকে বলা হয় মাহি সাওয়ার।

কীভাবে যাবেন-
ঢাকার কল্যাণপুর থেকে হানিফ, শ্যামলি, গ্রীণ লাইন পরিবহনসহ অনেক বাস সার্ভিস আছে বগুড়া পর্যন্ত। এসব পরিবহনের ভাড়া লাগবে ৫শ থেকে১ হাজার টাকা পর্যন্ত। পাঁচ-ছয় ঘণ্টায় চলে যাবেন বগুড়া শহরে।
থাকবের যেখানে-
এখানে রাত্রিযাপনের জন্যে অনেক হোটেল রয়েছে। পর্যটন হোটেলেও থাকতে পারেন আপনি। পাশাপাশি রয়েছে কিছু মোটেলও। এগুলোর জন্য আগে থেকেই বুকিং দিয়ে যাবেন।
সম্পাদনা: এম. সুরুজ্জামান, বার্তা সম্পাদক শেরপুর টাইমস ডটকম।