শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার লঙ্গরপাড়া গ্রামের এক তরুণীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে জামালপুর যৌনপল্লিতে বিক্রির অভিযোগে লোকমান মিয়া (২৩) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৪ জামালপুর।
৯ আগস্ট শ্রীবরদী থানায় ভুক্তভোগী তরুণীর মায়ের দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে গতকাল রোববার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর বিমানবন্দর দক্ষিণখান এলাকা থেকে লোকমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গ্রেপ্তার লোকমান শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে।
জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান জানান, শ্রীবরদী উপজেলার লঙ্গরপাড়া গ্রামের ওই তরুণীর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় ঝিনাইগাতি উপজেলার পাইকুড়া গ্রামের এক যুবকের সাথে। সংসারে বনিবনা না হওয়ায় প্রায় দুই বছর আগে ওই সংসার ভেঙে যায়। এরপর ওই তরুণী বাবা-মায়ের সঙ্গে গাজীপুরে বসবাস করতেন। বাবা-মায়ের সঙ্গে একই পোশাক কারখানায় কাজ করতো লোকমান। সে সুবাধে বাসায় আসা-যাওয়ার সূত্র ধরে তরুণীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে লোকমানের।
তিনি বলেন, বিষয়টি জানাজানি হলে তরুণীকে নানাবাড়ি দক্ষিণ লঙ্গরপাড়ায় পাঠিয়ে দেয় তার বাবা-মা। এতে লোকমান ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে ওই তরুণীর সাথে যোগাযোগ করে। একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভনে ফেলে গত ২০ জুন নানা বাড়ি থেকে তরুণীকে নিয়ে যায়। দিনভর নানা জায়গায় ঘোরাফেরা করে কৌশলে জামালপুর যৌনপল্লিতে বিক্রি করে পালিয়ে যায় লোকমান।
এদিকে মেয়ে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি পারিবারিক সম্মানের ভয়ে কাউকে না জানিয়ে গোপনে খুঁজতে থাকেন অভিভাবকেরা। একপর্যায়ে ৫ আগস্ট তরুণীর মায়ের মোবাইল ফোনে অজ্ঞাত নাম্বার থেকে ফোন আসে। ফোনটি রিসিভ করতেই ওই নাম্বার থেকে ‘আমাকে বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার শোনা যায়। তবে এসময় ঠিকানা বলতে পারেনি
ভুক্তভোগী তরুণী।
পরবর্তীতে ভিন্ন মাধ্যমে মেয়েকে জামালপুর যৌনপল্লিতে বিক্রির বিষয়টি জানতে পেরে ৯ আগস্ট শ্রীবরদী থানায় মামলা দায়ের করেন ওই তরুণীর মা। মামলার পর রাতেই ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
আশিক উজ্জামান আরও জানান, এ ঘটনার পর থেকে আসামি গ্রেপ্তার এড়ানোর লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় আত্মগোপনে ছিল। এরই সূত্র ধরে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে র্যাবের একটি আভিযানিক দল ঢাকা জেলার বিমানবন্দর এলাকা থেকে আসামিকে গ্রেপ্তার করে। আসামিকে শ্রীবরদী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।