জামালপুরে সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম বাবুর জবানবন্দি নিয়ে মিথ্যাচারের অভিযোগ তুলেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অনশনে বসে এ অভিযোগ করেন তিনি। এসময় প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম বাবুর ফের রিমান্ড ও তার ছেলে রিফাতকে গ্রেফতাদের দাবি জানানো হয়।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ইউসূফ আলী বলেন, সাংবাদিক নাদিম হত্যার প্রধান আসামি চেয়ারম্যান বাবুর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির কথা বলা হয়েছিল। বিচারকের কক্ষ থেকে বেরিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আমাদের জানিয়েছিলেন, আসামি বাবু নিজে জড়িত হিসেবে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। কিন্তু এটি ছিল একটি মিথ্যাচার।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বস্ত সূত্রে নিশ্চিত হয়েছি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বাবু জড়িত মর্মে একটি শব্দও বলেননি। এছাড়া তার ছেলে রিফাত সেদিন জামালপুরে ছিলেন না, তিনি ১০ দিন আগে থেকেই ঢাকায় ছিলেন এরকম কথা বলেছেন। বাবু পুরোপুরি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে অস্বীকার করেছেন। তবুও তদন্ত কর্মকর্তা আমাদের কাছে স্বীকারোক্তির কথা বলেছেন।
আইনজীবী ইউসূফ আলী আরও বলেন, আমি মনে করি, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মামলাটি ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন এবং পরবর্তীতে বাবু চেয়ারম্যানকে দ্বিতীয়বার রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের চেষ্টাও তিনি করেননি। এতেই প্রমাণিত হয় সরাসরি তদন্ত কর্মকর্তা প্রধান আসামি বাবুকে বাঁচানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
অনশনে অংশ নিয়ে জামালপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিথ্যাচার করেছেন। আমরা বাদীপক্ষের আইনজীবীর মাধ্যমে জানতে পারলাম, চেয়ারম্যান বাবু কোনো স্বীকারোক্তি দেননি। আমরা আবারও ১৬৪ ধারায় বাবু চেয়ারম্যানের জবানবন্দি নেওয়ার দাবি জানাই। বাবু চেয়ারম্যানের ছেলে রিফাত বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেরাচ্ছে। কিন্তু সে গ্রেফতার হচ্ছে না। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা পুলিশকেই দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার তিন মাস হয়ে গেলো কিন্তু মামলার কোনো অগ্রগতি নেই, টালবাহানা চলছে। এক মাসের ভেতর চার্জশিট দেওয়ার কথা হয়েছিল কিন্তু আইনশৃঙ্খলাবাহিনী কথা রাখেনি। এই মামলায় দ্রুত বিচার হওয়ার কথা কিন্তু আসামিরা একজনের পর একজন জামিনে বের হয়ে যাচ্ছে।
নাদিম হত্যা মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ও বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা বলেন, মামলাটির প্রথম আইও (তদন্ত কর্মকর্তা) আমি ছিলাম। পরে জেলা ডিবির ইনচার্জকে আইও করা হয়। এখন আবার মামলাটি সিআইডির কাছে রয়েছে।
গ্রেফতার বাবু স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বাবু স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে আমরা জানি।
সংবাদ প্রকাশের জেরে গত ১৪ জুন রাতে বকশীগঞ্জ বাজারের পাটহাটি এলাকায় বাবু চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলার শিকার হন সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম। পরদিন বিকেল পৌনে ৩টায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।