শেরপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী ফজলুল হক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার আমলে দেশের ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘুরা শান্তিতে বসবাস করছেন। তিনি বলেন,বিগত ৯ বছরে দেশে হিন্দু, খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ নির্বিঘেœ তাদের ধর্মীয় আচার পালন করছেন। এখন আর বিএনপির আমলের মত সংখ্যালঘুরা দেশ ত্যাগ করছেন না।
মায়ানমারের সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনার পর দেশে বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে কেউ কোন কথা বলার সাহস পায়নি। জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রধানমন্ত্রী বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। এমপি আরও বলেন, আমাদের সরকারের নীতি সকল সম্প্রদায়ের অধিকার নিশ্চিত করা। এখানে সবাই সমান।
শুক্রবার সন্ধ্যায় শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলা হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আদিবাসী নেতা রবেতা ম্রং এর সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, দেশের ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষে ঐক্য পরিষদ ৭ দফার ভিত্তিতে আন্দোলন করছে। সেই আন্দোলন চুড়ান্ত পর্যায়ে নিতে ঐক্য পরিষদের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দাবী অনুযায়ী ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘু সমতলের আদিবাসীদের কল্যাণে ও উন্নয়নে দ্রুত পৃথক মন্ত্রনালয় গঠন করতে হবে। সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে বিদ্যমান কল্যাণ ট্রাস্টসমূহকে ফাউন্ডেশনে রূপান্তরিত করতে হবে।
সম্মেলনের প্রিয় অতিথি অতিরিক্ত ডিআইজি ও পুলিশ সুপার রফিকুল হাসান গনি বলেন, দেশে সংখ্যালঘু বলে কিছু নেই। সরকার ও প্রশাসন সবার সাথে সমান আচরণ করছে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা সব-সময় সংখ্যায় কম এমন জনগোষ্ঠীর প্রতি বিশেষ নজর দিই। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের পুলিশ জনবান্ধব। যেকোন সময় যে কেউ আমাদের কাছে সাহায্য চাইলে আমরা এগিয়ে আসি।
বিশেষ অতিথি ইউএনও ফারজানা করিম বলেন, দেশের মানুষ সবাই সমান। কেউ নিজেকে ছোট মনে করবেন না। আমরা সবসময় আপনাদের পাশে আছি।
সম্মেলনে আরেক বিশেষ অতিথি ঝিনাইগাতী থানার অফিসার ইনচার্জ বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন,জন্মের ওপর কারো হাত নেই। তাই মানুষ সবাই সমান। সবার প্রতি সমান আচরণ করা সকলের দায়িত্ব হওয়া উচিৎ।
উপজেলা ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব জীবন চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে জেলা হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আহবায়ক সাংবাদিক দেবাশীষ ভট্টাচার্য, সদস্য সচিব কানু চন্দ্র চন্দ, আহবায়ক কমিটির সদস্য প্রভাষক মলয় চাকী, প্রিয়োতোষ সরকার, নৃপেন ঘোষ, জেলা পুরোহিত কলাণ পরিষদের সভাপতি বিপুল চক্রবর্তী শেরপুর সদর উপজেলা ঐক্য পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বাদল চন্দ্র দে, সাধারন সম্পাদক সনজিত চক্রবর্তী, ঝিনাইগাতী পূজা পরিষদের সভাপতি গোপাল সেন গুপ্ত, জেলা রবিদাস সম্প্রদায়ের সভাপতি মিলন রবিদাস প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
সম্মেলন শেষে সংসদ সদস্য প্রকৌশলী ফজলুল হক উপজেলার ৭ ইউনিয়নের ১শ দরিদ্র মানুষের হাতে উপহার হিসেবে একটি করে কম্বল তুলে দেন এবং প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ থেকে উপজেলার সকল দরিদ্র আদিবাসী মানুষকে ১ লাখ টাকা মূল্যের পাকা ঘর তৈরি করে দেওয়ার ঘোষনা দেন।
দ্বিতীয় অধিবেশনে অতিথিদের উপস্থিতিতে কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে রবেতা ম্রংকে সভাপতি ও জীবন চক্রবর্তীকে সাধারন সম্পাদক, গোপাল সেন গুপ্ত ও রঞ্জন আরেংকে সভাপতি মন্ডলীর সদস্য, ভজন চন্দ্র বর্মণকে যুগ্ম সম্পাদক, প্রমোদ রায় ও পবিত্র ম্রংকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট ঝিনাইগাতী উপজেলা হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নতুন কমিটি ঘোষনা করা হয়। – প্রেস রিলিজ