শেরপুরের পৌর ট্রাক টার্মিনাল ইজারা নিয়ে জেলা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পৌর টোল আদায়ের নামে মালবাহী সকল প্রকার ট্রাক থেকে প্রকাশ্যে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে শেরপুর ট্রাক মালিক সমিতি ও ট্রাক-ট্যাংক লরি শ্রমিক ইউনিয়ন। ১৩ জুলাই বৃহস্পতিবার সকালে শহরের বটতলা এলাকায় ট্রাক মালিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেছেন ট্রাক মালিক সমিতি ও ট্রাক-ট্যাংক লরি শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।
এসময় তাঁরা চাঁদাবাজি বন্ধে করার জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানান। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে তাঁরা পরিবহন ধর্মঘটেরও হুমকি দেন।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি মো. আব্দুল হাই, সাধারন সম্পাদক এসএম আব্দুল্লাহহেল ওয়ারেজ নাঈম, আন্তঃজেলা ট্রাক-ট্যাংক লরি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. আরিফ রেজা ও সাধারন সম্পাদক মো. মজিবর রহমান বক্তব্য রাখেন।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, পৌর কর্তৃপক্ষ ট্রাক টার্মিনাল ইজারার শর্তে পরিস্কারভাবে উল্লেখ করেছেন “ ইজারাদার টার্মিনাল ব্যবহার করে রোড ড্যামেজ ও টার্মিনাল টোল বাবদ ট্রাক প্রতি ৫০ টাকা আদায় করবে। লোড-আনলোড পয়েন্ট ছাড়া রাস্তায় দাঁড়িয়ে টোল আদায় করা যাবেনা। কিন্তু ওই শর্ত ভঙ্গ করে ইজারাদার জেলা শহরের খোয়ারপাড় মোড়, শেরীঘাট ও নবীনগর এলাকাসহ বেশ কয়েকটি স্থানে সকল ট্রাক চালকদের জিম্মি করে চাঁদা আদায় করছে। এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করা হলে ইজারাদার ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা গত ১৭ জুন সারোয়ার হোসেন নামে এক মালিকের সুদু এন্টারপ্রাইজ নামে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে এবং ক্যাশবাক্স থেকে টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ওই ঘটনায় সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হলে ইজারাদার ওই মালিকের বিরুদ্ধেও একটি সাজানো মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, সড়ক বিভাগের রাস্তায় পৌর কর্তৃপক্ষ কোনভাবেই টোল আদায় করতে পারেনা। দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে ট্রাক এলেই ইজারাদার সড়ক বিভাগের রাস্তায় টোলের নামে চাঁদা আদায় করছে। এ অবস্থা দেখে নকলা ও ফুলপুর উপজেলাতেও একই কায়দায় চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এসব কারণে ট্রাক মালিকদের মাল পরিবহনে অধিক টাকা দিতে হচ্ছে। এতে তাদের ব্যাপক লোকসান গুনতে হচ্ছে। পৌর মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়াকে বার বার বলার পরও তিনি রহস্যজনক আচরন করছেন। তাই কোন উপায় না পেয়ে ঘটনাটি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সাংবাদিক সমাজকে অবহিত করা হলো।
এ ব্যাপারে শেরপুর পৌরসভার মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ সিস্টেম পূর্ব থেকে চালু রয়েছে। আমি নতুন করে কিছু তৈরি করিনি। তিনি বলেন, টার্মিনালে কোন ট্রাক আসেনা। তারা বাইরে থেকে চলে যায়। তাই পৌর শহরের লোড-আনলোড হয় এমন কয়েকটি পয়েন্ট থেকে ইজারাদার টাকা তুলছে।
শেরপুরের জেলা প্রশাসক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি পৌর মেয়রকে ডেকে বলে দিয়েছি যে, নীতিমালার বাইরে কোন টোল আদায় করা যাবেনা। এসব বন্ধ করতে হবে। যদি বন্ধ না হয় তবে আমরা হস্তক্ষেপ করবো।