স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরনের লক্ষ্যে শেরপুর পৌর পরিষদের সাথে মতবিনিময় সভা হয়েছে। ২৬ মে রবিার দুপুরে শেরপুর পৌরসভার সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পৌর মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন।
সভায় পৌরসভার কর্মকান্ডে স্থানীয় আদিবাসীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, নেতৃত্বের বিকাশ ও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করার দাবী জানানো হয়। এজন্য পৌরসভার টিএলসিসি (টাউন লেবেল কো-অর্ডিনেশন কমিটি) এবং ওয়ার্ড কমিটিগুলোতে আদিবাসী নাগরিকদের সংযুক্ত করার দাবী জানান আদিবাসী নেতারা।
নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগ শেরপুর কমিটি আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সংস্থা, আইইডি, ট্রাইবাল ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশন ও হিউম্যান রাইডস ডিফেন্ডার্স ফোরাম যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
জনউদ্যোগ আহ্বায়ক শিক্ষাবিদ আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় প্যানেল মেয়র আতিকুর রহমান মিতুল, মানবাধিকার কর্মী রাজিয়া সামাদ ডালিয়া, আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি মলিন বিশ্বাস, সদর ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন সভাপতি ডেনিস দুলাল মারাক, আদিবাসী নেতা সুমন্ত বর্মন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মুক্ত আলোচনায় বৈচিত্রময়, বহুত্ববাদী সমাজ বিনির্মাণে আদিবাসীদের সংস্কৃতি রক্ষার দাবী জানিয়ে আরও বক্তব্য রাখেন শহর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্ত, শিক্ষাবিদ শিব শংকর কারুয়া, উদীচী জেলা সভাপতি তপন সারোয়ার, সংস্কৃতি কর্মী এসএমএ হান্নান, মানবাধিকার কর্মী শামীম হোসেন, আইইডি প্রকল্প সমন্বয়কারি মানিক পাল, সাংবাদিক হাকিম বাবুল, নৃত্যগুরু কমল পাল, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাবিহা জামান শাপলা প্রমুখ।
তারা বলেন, সমতলের পিছিয়ে পড়া আদিবাসীদের পৌরসভার সাথে সম্পৃক্ততা কম বলে উন্নয়ন পরিকল্পনায় আদিবাসীদের বিষয়গুলো অনেক সময় গুরুত্ব সহকারে উঠে আসেনা। এই পিছিয়েপড়া নাগরিকদের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। এজন্য আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জীবনমানের পরিবর্তন করে সমাজের মুলধারায় নেয়ার জন্য স্থানীয় উন্নয়ন কাঠামোর সাথে তাদের সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন। তাদের ভাষা, সংস্কৃতি রক্ষা এবং জীবনমান উন্নয়নের জন্য শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা প্রয়োজন। আদিবাসী নাগরিকদের বর্তমান অবস্থার প্রতি সংবেদনশীল হয়ে সকলে মিলে চেষ্টা করলে আদিবাসীদের স্থানীয় সরকারে অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করতে পারি।
সভায় প্রধান অতিথি শেরপুর পৌরসভার মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া বলেন, শেরপুর পৌর এলাকায় কতটি আদিবাসী জনগোষ্ঠির কতজন লোক রয়েছে এবং পৌরসভার কোন কোন ওয়ার্ডে কী পরিমাণ আদিবাসীর বসবাস রয়েছে, সে সংক্রান্ত কোন তথ্য আমাদের হাতে নেই। আমরা এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে পৌরসভার ওয়ার্ড কমিটি সহ বিভিন্ন কমিটিতে তাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে চেষ্টা করবো। পৌরসভার উন্নয়ন কর্মকান্ডে আদিবাসী জনগোষ্ঠির অংশগ্রহণ বৃদ্ধি সহ তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এ মতবিনিময় সভায় পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, পৌর পরিষদের সদস্য, স্থানীয় রাজনীতিক, সমাজবর্মী, মানবাধিকার কর্মী সহ আদিবাসী জনগোষ্ঠির অর্ধশতাধিক নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।