শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে চরম ক্ষোভ ও হাতাশা প্রকাশ করেছেন উপজেলার ১নং পোড়াগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একাংশ, যুবলীগ ও কৃষক লীগসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সোমবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে বর্তমান চেয়ারম্যান আজাদ মিয়ার বাড়িতে নেতাকর্মীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় ক্ষোভ ও হতাশার কথা প্রকাশ করে আজাদ মিয়াকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তৃতীয়বারের মতো বিজয়ী করার দাবীও জানান তারা।
আলহাজ্ব আব্দুল মোতালেব এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন- ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ইস্রাফিল আলম, আ’লীগ নেতা এরশাদ আলী, ওমর আলী, আজগর আলী, আবুল কালাম আজাদ, নজরুল ইসলাম, লুৎফর রহমান মিঠু, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মুরাদুজ্জামান মুরাদ, সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মজনু, ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি আবু সাঈদ দেওয়ান ও সুলতান আহমেদ প্রমুখ। ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আজাদ সমর্থিত এবং আওয়ামী লীগ সমীর্থত হাজারো নেতাকর্মী মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।
বক্তব্যকালে নেতৃবৃন্দ জানান, বিগত নির্বাচনের পর থেকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে দলীয় প্রার্থীর বাইরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন এমনকি পুরো পাঁচটি বছর দলের বিভাজন সৃষ্টি করে রেখেছে। সাধারণ সম্পাদকও দলীয় কর্মকান্ড থেকে ছিল দূরে। পাঁচ বছর ধরে এই দুঃসময়ে প্রচুর অর্থ ও শ্রমসহ সবকিছু দিয়ে দলকে এবং বেগম মতিয়া চৌধুরীর রাজনীতিকে সমুন্নত রেখেছেন চেয়ারম্যান আজাদ মিয়া। দলের মূল ধারার রাজনীতি রক্ষা করতে গিয়ে তিনি একই দলের প্রতিপক্ষের প্রতিহিংসার বলি হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। পোড়াগাঁও ইউনিয়নে আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী ও গুছিয়ে রাখতে আজাদ মিয়া যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন সে অনুযায়ী দল তাকে বঞ্চিত করেছে। আজ যাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তার পেছনে কোন লোক নেই। গতকাল মনোনয়ন ঘোষণার পর ১৫-২০ জন সমর্থক নিয়ে নৌকা প্রতীকে মনোনীত প্রার্থী মিছিল করেছেন। যা আমাদের জন্য এবং দলের জন্য লজ্জাজনক।
তারা আরও বলেন, আজাদ মিয়া পরপর দুই দফায় কোন দলের সহযোগিতা ছাড়াই সম্পূর্ণ ব্যক্তি ইমেজ ও সামর্থে জনগণের ভালোবাসা নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান হিসেবে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি যেভাবে অভিভাবকের মতো আমাদের পাশে থেকে ছায়া দিয়ে রেখেছেন, পুনরায় যদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হন তবে আমরা আবারও তাকে বিজয়ী করব ইনশাআল্লাহ।
এসময় তারা অপাত্রে এবং বিতর্কিত ও ভোটারবিহীন প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে তা পুর্নবিবেচনারও আহবান জানান।
মতবিনিময় সভায় আজাদ মিয়া জানান, আপনারা যেভাবে ভালোবাসা দিয়ে বিগত দশ বছর আমার সাথে ছিলেন এবং আমিও আপনাদের পাশে ছিলাম। চেয়ারম্যান হই আর না হই পরবর্তী সময়ও আপনাদের পাশে থাকব। কেউ আপনাদের কিছু করতে পারবে না। আমরা আগের মতোই মাথা উঁচু করে চলব। বিপদে-আপদে সবসময় আমাকে আগের মতোই পাশে পাবেন। এ নির্বাচনে আপনারা যে সিদ্ধান্ত নেবেন আমি তাই মাথা পেতে নেব। যদি ঢাকায় চলে যেতে বলেন তাই করব, আর যদি নির্বাচন করতে বলে তাই করব। আপনাদের সিদ্ধান্তই হবে আমার সিদ্ধান্ত। মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন বয়সী পুরুষ সমর্থক ছাড়াও নারী সমর্থকরা অংশ নেন। এসময় অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।